মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে না পেরে পশ্চিমবঙ্গে ছাত্রীর আত্মহত্যা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২১, ১১:৪৬ PM , আপডেট: ০৯ জুন ২০২১, ১২:৫৪ AM
করোনার কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলতি বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। আর সেই অবসাদের জেরে রাজ্যের কোচবিহার জেলার দিনহাটায় আত্মহত্যা করেছে বর্ণালী নামে এক ছাত্রী। ছাত্রীর পরিবারের দাবি, মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছে তাদের বাড়ির মেয়ে।
ছাত্রীটির পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, বাতিলের খবর পাওয়ার পর থেকেই চুপচাপ হয়ে যায় বর্ণালী। বিকেল থেকেই বাড়ির কারোর সঙ্গেই কথা বলছিল না সে। রাতে খাওয়ার সময় তাকে ডাকাডাকি করেও তার সাড়া পায়নি। এরপরই তারা ঘরের দরজা ভেঙে দেখে তার শরীর ফ্যান থেকে কাপড়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, মৃত ছাত্রীটি ভালো নম্বরের আশায় প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সারাদিন পড়াশোনায় ডুবে থাকতো সে। পরীক্ষায় ভালো ফল করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়েছিল সে। বাবাকে সহযোগিতায় করাই ছিল তার উদ্দেশ্য।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে লাল কালিতে লেখা ছিল ‘তোমার কাজের দায়িত্ব নিতে পারলাম না বাবা’।
চলমান পরিস্থিতিতে দুই বোর্ডের পরীক্ষা হওয়া উচিত কিনা তা জানার জন্য রবিবার (৬ জুন) পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ রাজ্যবাসীকে ই-মেইল করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সোমবার (৭ জুন) প্রায় ৩৪ হাজার ই-মেইল জমা পড়েছিল। বেশির ভাগ রাজ্যবাসী পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তবে ই-মেইল করে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিল দিনহাটার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বর্ণালীর মতো অনেকে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের সঙ্গে তার মত মেলেনি। আর এতেই গভীর হতাশায় চরম সিদ্ধান্তের পথ বেছে নিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
পরীক্ষা প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের ই-মেইল মতামত নেওয়া এবং বাতিলের সিদ্ধান্তকে চরম অদূরদর্শী ও হটকারী সিদ্ধান্ত বলে মঙ্গলবার (৮ জুন) ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বামছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, সরকার মনে করছে সবাই পরীক্ষার বিরুদ্ধে। কিন্তু বাস্তবে পরীক্ষার পক্ষেও মতামত রয়েছে। সরকারের অদূরদর্শী ও খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের জেরেই এ মর্মান্তিক পরিণতি। রাজ্যে অনলাইন পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই। কারণ এখন সবার কাছে স্মার্টফোন নেই। তাই আমাদের মত ছিল কোভিডবিধি মেনে নিজ নিজ স্কুলেই পরীক্ষা দিক শিক্ষার্থীরা। অন্তত তাতে পরীক্ষার্থীদের যোগ্যতা প্রমাণ হতো। সবার কথা ভেবেই মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।