তুষ্টির মৃত্যু অস্বাভাবিক বলছে পরিবার, তদন্ত করছে পুলিশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২১, ০৯:২৪ AM , আপডেট: ০৮ জুন ২০২১, ০৯:২৪ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইশরাত জাহান তুষ্টির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে রাজধানীর আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারে। তুষ্টির পরিবার বলছে, তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। বড় কোনো অসুখও ছিল না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন তুষ্টির স্বজনেরা। এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
তুষ্টির বাবা আলতাফ মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার আর কিছু রইলো না। মেয়েকে নিয়ে আশা ছিল, সে ম্যাজিস্ট্রেট হবে। বিয়ের প্রস্তাব এলেও সম্মত হইনি। অভাবের সংসার, ছোট ছেলে প্রতিবন্ধী। বড় ছেলে সৌদি আরবে গেছে বোনকে মানুষের মতো মানুষ করতে। কিন্তু কীভাবে কি হলো জানি না। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে তদন্ত ও বিচার প্রত্যাশা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসীম উদ্দীন মোল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ফরেনসিক প্রতিদেন পেলে জানা যাবে।’
জানা গেছে, গত শনিবার ভোর রাতে তুষ্টির রুমমেটের ফোন পেয়ে দরজা ভেঙে তাকে বাথরুম থেকে নিথর অবস্থায় বের করে ফায়ার সার্ভিস। বাথরুমের সিটকিনি বন্ধ ছিল ভেতর থেকে। ট্যাপ কল থেকে পানিও পড়ছিল। সেখানে ফ্লোরে কাত হয়ে পড়ে ছিল তুষ্টি। পানিতে তার শরীরও ভিজে ছিল। বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ হওয়ায় বাইরে থেকে খোলার সুযোগ ছিল না।
তুষ্টির রুমমেট, বন্ধু ও স্বজনদের তথ্য অনুযায়ী, ঠাণ্ডা ও অ্যালার্জির সমস্যা ছিল তার। সুরতহাল প্রতিবেদনে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা সমস্যা দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে তুষ্টির চাচা স্থানীয় কলেজের প্রভাষক ইমাম হোসেন মেহেদী বলেন, বড় অসুখ ছিল না তুষ্টির। অথচ খবর প্রকাশিত হয়েছে তার অ্যাজমা, কাশি ইত্যাদি ছিল। ইনহেলার ব্যবহারের তথ্যও সঠিক নয়। সামান্য এলার্জির সমস্যা ছিল। এ জন্য অ্যালাট্রল জাতীয় ওষুধ খেতো।
ইমাম হোসেন মেহেদী জানান, কৃষিকাজের পাশাপাশি ছোট ব্যবসা করেন তুষ্টির বাবা। তাকে মেয়ের মতো করে গড়েছেন চাচা ইমাম হোসেন। তুষ্টির এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলই ভালো ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তিও হন। পরিবারের সদস্যদের আশা ছিল, তুষ্টি বিসিএস ক্যাডার হবে। বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিসিএসের জন্য প্রস্তুতিও নেন। অনার্স শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তারা।
ইমাম হোসেন বলেন, যথেষ্ট ভদ্র এবং শান্ত মেয়ে ছিল তুষ্টি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কারো সঙ্গে বেশি আড্ডা দিতে পছন্দ করতো না। তার ব্যক্তিগত প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ও ছিল না।