কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানি’ চালাতেন লন্ডনে পড়াশোনা করা রাজিব
টঙ্গীর রাজিব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী। অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে চার বছর আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এর ছয় মাসের মাথায় জামিনে বের হন। ফের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ান লন্ডনে লেখাপড়া করা রাজিব চৌধুরী। টঙ্গীতে পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া কিশোর গ্যাং ‘ডেয়ারিং কোম্পানি’ বা ‘ডি কোম্পানির’ পৃষ্ঠপোষক তিনি।
আজ রোববার (৬ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় শনিবার (৫ জুন) রাজিবসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে। লন্ডনে দুই বছর পড়াশোনা করা রাজিবের বাড়ি নোয়াখালী হলেও থাকে টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তাঁদের ভয়ে কেউ মুখ খুলত না। চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দুই থেকে তিন লাখ টাকা পেতেন রাজিব। আর প্রতি সপ্তাহে গ্যাংয়ের সদস্যদের দিতেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে।
ডি কোম্পানির গ্রেপ্তার ১২ সদস্য হলেন, রাজিব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী (৩৫), মইন আহমেদ নীরব ওরফে ডন নীরব (২৪), তুহিন ওরফে তারকাঁটা তুহিন (২১), রাজিব আহমেদ নীরব (৩০), তানভীর হোসেন ওরফে ব্যাটারি তানভীর (২৪), পারভেজ ওরফে ছোট পারভেজ (১৯), সাইফুল ইসলাম ওরফে শাওন (২৩), রবিউল হাসান (২০), (১৮), মাহফুজুর রহমান ফাহিম (২২), শাকিল ওরফে বাঘা শাকিল (২৮), ইয়াছিন আরাফাত ওরফে বিস্কুট ইয়াছিন ও ইয়াছিন মিয়া (১৯)।
র্যাব জানায়, পাঁচ দিন আগে টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায় একটি ফুচকার দোকানে যান ডি কোম্পানির সদস্যরা। তখন ফুচকার দোকানে সব চেয়ারে মানুষ ছিল। ডি কোম্পানির সদস্যরা সবাইকে চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু চেয়ার না ছাড়ায় তুহিন আহম্মেদ ও তুষার আহম্মেদকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন তাঁরা। এ ঘটনায় তুহিন টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন।
এর পরদিন গত ৩ জুন ডি কোম্পানির সদস্যরা একটি দর্জি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এ সময় আরজু মিয়াসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেন তাঁরা। গণমাধ্যমে এ খবর আসার পর র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। তাদের তদন্তে উঠে আসে, টঙ্গী এলাকার আতঙ্ক ডি কোম্পানির নেতৃত্বে দিচ্ছেন রাজিব চৌধুরী। এই গ্যাংয়ের সদস্য সংখ্যা ৫০। সবার বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর।
খন্দকার আল মঈন বলেন, উঠতি বয়সের ছেলেদের বিভিন্ন কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে মারামারি আলোচিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালায়। নানা বিষয় নিয়ে মানুষের ওপর চড়াও হয়। যারা কিশোর গ্যাংকে প্রশ্রয় দেবে ও সদস্য হবে, তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানান তনি।