টিকটকে পরিচয়, চাকরির কথা বলে ভারতে পাচার করে পতিতাবৃত্তি
- ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২১, ০৯:৩৫ PM , আপডেট: ০৪ জুন ২০২১, ০৯:৫০ PM
দুই বোনকে টিকটকের ফাঁদে ফেলে বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা উভয়ে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গাইনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাদের নাম কুলছুমা খাতুন (২০) ও সুমাইয়া খাতুন (১৮)।
পাচারকারী চক্রের নির্যাতনের শিকার ওই দুই তরুণী বাবা গত ২৭ মে গফরগাঁও প্রেস ক্লাবে এসে এসব ঘটনা বিস্তারিত জানান। পালিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় একজন পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে কলকাতার শিয়ালদহ এলাকায় সরকারি সেফ হোমে এবং অপরজন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
তরুণীদ্বয়ের বাবা দিনমজুর আজিজুল ইসলাম জানান, অভাবের সংসারের হাল ধরতে তার মেয়েরা দুই বছর আগে ঘর ছাড়েন। পরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় রিদিশা ফুড এ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানীতে চাকরী নেন দুই বোন। সেখানে ওই এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করার সময় মোটামোটি ভালোভাবেই চলতে ছিলো তাদের দিনকাল।
তিনি বলেন, পরে সেখানে নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য মো. সুজন মিয়া (৪৫) ও মো. ইউসুফ মিয়ার (২২) সঙ্গে তাদের টিকটকে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই দুই বোনের একজনকে বিয়ে করেন ইউসুফ। বিয়ের কিছুদিন পর ভালো চাকরির মাধ্যমে মাসে ৪০/৫০ হাজার টাকা আয়ের লোভ দেখিয়ে দুই বোনকে চুয়াডাঙ্গা জেরার জীবননগর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে নিয়ে যান ইউসুফ ও সুজন।
দুই বোনকে ভারত নিয়ে গিয়ে বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে। তিনি বলেন, তাদের তিন লাখ টাকায় ভারতের রানাঘাট এলাকায় নিয়ে বাবলু ও রাহুল নামে দুই জনের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে তারা (বাবলু ও রাহুল) পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এলাকার বিভিন্ন বাসায় ও হোটেলে রেখে ওই দুই বোনকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। এসময় দুই বোনকে আলাদা জায়গায় রাখা হতো। কথামতো কাজ না করলে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হতো।
এদিকে, গত ২৭ মে পাচার হওয়া দুই বোনের বাবা-মা তাদের নিখোঁজের ব্যাপারে প্রথমে গফরগাঁও থানায় পরে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে গিয়ে ব্যর্থ হন বলে জানান তরুণীদ্বয়ের বাবা আজিজুল ইসলাম।
কুলছুমা ও সুমাইয়ার মামা হুমায়ুন কবীর বলেন, আমার ভগ্নিপতি গ্রামের সহজ সরল মানুষ। গত তিন মাসে মেয়েদের সন্ধানে যে যেখানে বলেছে তারা খোঁজ করেছেন। বিষয়টি পুলিশ এড়িয়ে গেলে তারা ময়মনসিংহ র্যাবের স্মরণাপন্ন হন।
মেয়েদের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি দিন মজুরি করে সংসার চালাই। আমার দুই মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
শ্রীপুর থানার ওসি খন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়টি তার জানা নেই।’ আর ‘গফরগাঁও থানার ওসি অনুকুল সরকার বলেন, ঘটনার স্থান কাল এ থানার অন্তর্গত নয় বলে সাধারণ ডায়েরি হয়নি।