কোয়ারেন্টিনে ভারতফেরত তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
ভারত থেকে ফিরে আসার পর কোয়ারেন্টিনে থাকা এক তরুণীকে (২২) আইসোলেশন কেন্দ্রে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) গ্রেপ্তার করেছে খুলনা নগর পুলিশ। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী বাদী হয়ে সোমবার (১৭ মে) খুলনা সদর থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওই এএসআইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্তের নাম মোখলেছুর রহমান। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কোর্ট সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। তিনি খুলনার প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ১ মে থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এডিসি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, এ মাসের ১৩ তারিখ যশোরের বেনাপোল হয়ে বাংলাদেশে ফেরেন ভারতে আটকে পড়া এই তরুণী। ফেরার পর সেদিনই পাশের জেলায় খুলনা শহরের পিটিআই সেন্টার আইসোলেশন কেন্দ্রে তাকে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। সেখানে ১৩ তারিখেই ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে বলে তরুণী অভিযোগ করেছেন।
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, তরুণীর অভিযোগ অনুযায়ী ১৩ তারিখ এই আইসোলেশন কেন্দ্রে পাহারার দায়িত্বে থাকা সাব ইন্সপেক্টর তাকে ধর্ষণ করেছেন। এই অভিযোগে তরুণী নিজেই বাদী হয়ে সদর থানায় আজ মামলা করেন। সেই মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে খুলনা সদর থানা পুলিশ। এই ঘটনায় তাকে ইতোমধ্যেই পুলিশ বিভাগ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
খুলনা পিটিআইয়ের তত্ত্বাবধায়ক এবং কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ভারত থেকে আসা নারীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য পিটিআইয়ের মেয়েদের হোস্টেলের দ্বিতীয় তলা ব্যবহার করছে জেলা প্রশাসন। এ পর্যন্ত ১৪ জন নারীকে সেখানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ১০ জন কোয়ারেন্টিনে শেষ করে চলে গেছেন। তবে ধর্ষণের ওই অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
ওই নারীর কোয়ারেন্টিনের সময় এখনো শেষ হয়নি জানিয়ে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন তদন্ত করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুপ আলীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নানা আইনি প্রয়োজনে তাঁকে কোয়ারেন্টিন সেন্টার থেকে বের করে আবার ওই কেন্দ্রেই রাখা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।