ত্রাণ না পেয়ে ইউপি মেম্বারের ছেলেকে হত্যার অভিযোগ
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় পূর্ব বিরোধ ও ত্রাণ সামগ্রী না পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের ছেলেকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মো. জসিম উদ্দিন (৩৫)। শনিবার (১ মে) রাত ৩টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনা সৈয়দপাড়া এলাকায় জসিমকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় ৭-৮ জন দুর্বৃত্ত।
পরে মঙ্গলবার (৪ মে) বিকাল চারটায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি কাঞ্চনা ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইছহাকের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করোনা মহামারীতে অসহায় মানুষের জন্য গত সপ্তাহে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পাওয়া ত্রাণ সামগ্রী কাঞ্চনার ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইছহাক তালিকা করে ওই ওয়ার্ডের অসহায় ৭০ জনকে বিতরণ করেন। তালিকায় নাম না থাকায় ত্রাণ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই এলাকার শমসু মিয়া প্রকাশ জুনুর মাদকাসক্ত ছেলে খলিলুর রহমান প্রকাশ খইল্যা (৩৫) চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে নাম ধরে প্রকাশ্যে গালিগালাজ ও হুমকি দেন।
বিষয়টি জানার পর মেম্বার ইছহাক গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় খলিলুর রহমানকে ডেকে বকাবকি করেন ও তার পিতা-মাতাকে সাবধান করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে খলিল গত শনিবার গভীর রাতে বাড়ীর পাশ দিয়ে আমিরাবাদে ব্যবসায়ীক কাজে যাওয়ার পথে জসিমকে আটকিয়ে ৭-৮ জন মিলে স্বজোরে ধারালো দা দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে জসিম গুরুতর আহত হলে লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার তিনদিন পর মঙ্গলবার বিকালে জসিম মারা যান।
নিহতের বাবা ইছহাক বলেন, রমজান আলী চেয়ারম্যানের তহবিল থেকে দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী দুস্থদের মাঝে বিতরণ করেছি। জুনুর মাদকাসক্ত ছেলে খলিল ত্রাণ না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কাঞ্চনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রমজান আলী জানান, খলিলুর রহমান একজন মাদকাসক্ত ছেলে। ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়াকে কেন্দ্র করে খলিল শনিবার রাতে জসিমকে কুপিয়ে আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকালে সেই মারা যায়।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, মারা যাওয়া জসিম ও তার প্রতিপক্ষরা মাংস বিক্রেতা। পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারামারি হলে রবিবার বিকাল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জসিম মারা যান। ঘটনার পরদিন জসিমের বাবা ইউপি সদস্য মো. ইছহাক বাদি হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মারামারির ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।