ইন্টারনেটে প্রেমের সম্পর্ক থেকে হয়রানির শিকার ৩৩ শতাংশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১০:৫৯ AM , আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১০:৫৯ AM
ইন্টারনেটে একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ছড়ানোর মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন বেড়েছে। এর মধ্যে ৬৯ দশমিক ৪৮ শতাংশই আপনজনের মাধ্যমে হয়রানির ঘটনা ঘটছে। ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ও অপরাধীর মধ্যে প্রেমঘটিত সম্পর্কের তথ্যও উঠে এসেছে। ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ঘটনায় অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত।
রবিবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস (সিসিএ) ফাউন্ডেশন। ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) চ্যাপ্টারের গবেষণা সেলের সদস্যরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স্ক ভুক্তভোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যা প্রায় ৫৬.৪৯ শতাংশ ও ৩২.৪৭ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের নিচে)।
এতে বলা হয়, জেন্ডারভিত্তিক ভুক্তভোগীর বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ৩০ বছর এবং ১৮ বছরের নিচে পুরুষের তুলনায় নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা বেশি।
জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোর ২০২০ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগৃহীত ১৫৪টি অপরাধের ঘটনা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এ উপলক্ষে রোববার সকালে অনলাইনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
গবেষণা প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার মনিরা নাজমী জাহান। অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, বাবা-মা দুজনেই চাকরিজীবী হলে সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ধারাবাহিক ও যথাযথ সেক্স এডুকেশন খুব প্রয়োজন। খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, অপরাধের মাত্রায় বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্নতা দেখা যায়। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতিতে অনলাইন কার্যক্রম বেড়েছে। ফলে এ ধরনের অপরাধ করার জন্য সময় বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য বেশি বেশি সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, অপরাধের শিকার হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা বেশির ভাগই সামাজিক কারণে আপনজনদের সঙ্গে আলোচনা করে না। এটি একদম উচিত নয়। ঘটনার শুরুতে কাউকে না জানালে পরবর্তীতে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যায়।