মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁসে বিপুল সম্পত্তির মালিক, অবশেষে ধরা
সরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েও দীর্ঘদিন ধরে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন আব্দুল লতিফ আকন্দ। শহীদ মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত এই ব্যক্তির শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জালে আটকা পড়েছেন তিনি।
বুধবার (২৪ মার্চ) সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৯ এবং ২০ জুলাই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তারা হলেন- জসীম উদ্দীন ভূঁইয়া, পারভেজ খান, জাকির হোসেন ওরফে দিপু, মোহাইমিনুল ওরফে বাঁধন ও এস এম সানোয়ার হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ছিল। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁসের বিশাল এক সিন্ডিকেটের খোঁজ মেলে। এদের মধ্যে প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা জসিমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন গ্রেফতারকৃত আব্দুল লতিফ আকন্দ। জসিমের উদ্ধার করা একটি নোট বুকে উল্লেখ ছিল যে, আব্দুল লতিফ আকন্দ ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছে।
সূত্র জানায়, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে আব্দুল লতিফ বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস করে অবৈধভাবে সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি প্রশ্ন ফাঁস করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করে সিআইডি। ওই মামলার আসামিরা হলেন- ময়েজ-সোহেলী জামান নামে এক চিকিৎসক দম্পতি, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নু, জসিমের স্ত্রী পারভীন আরা জেসমিন, জসিমের বড় বোন শাহজাদী আক্তার মীরা, মীরার স্বামী আলমগীর হোসেন, জসিমের আরেক বোন জামাই জাকির হাসান দীপু, মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম, রাশেদ খান মেনন, এম এইচ পারভেজ খান, ডা. জেড এম এস সালেহীন শোভন, সাজ্জাত হোসেন ও আলমাস হোসেন শেখ।
এছাড়াও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁস করে বিপুল সম্পত্তি অর্জনের তথ্য পেয়েছে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ। এর মধ্যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক- নিটোরে কর্মরত ডা. জিল্লুর হাসান রনি, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি থানাধীন পবনাপুর মালিয়ানদহ এলাকার আব্দুল মমিন প্রধানের ছেলে মাহমুদুন নবী ওরফে মজুনর সংশ্লিষ্টতা। এদের মধ্যে গত ২২ মার্চ নিটোরের ডা. জিল্লুর হাসান রনিকে সিআইডি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
প্রশ্ন ফাঁস করে অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে তোলা সকল ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার জন্য সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম অনুসন্ধান করছে। সবার অবৈধ সম্পদ আদালতের মাধ্যমে জব্দ করারও পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।