কলেজ সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

  © সংগৃহীত

দুটি পদে দু'জন নিয়োগের জন্য অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে । এছাড়া কলেজের জমিদাতার কাছ থেকে ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগের জন্য ৮ লাখ টাকা নিয়েও চাকরি না দেবার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী রাজা মালিথা জানান, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কয়া মহাবিদ্যালয়ে ল্যাব সহকারী ও অফিস সহকারী পদে ২ জন প্রার্থী নিয়োগের জন্য কুষ্টিয়ার স্থানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে তিনি কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ ও সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চুন্নুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ৮ লাখ টাকা দাবি করেন।

তখন করোনা পরিস্থিতির কারণে নিয়োগ স্থগিত করে আবার একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।

তিনি ল্যাব সহকারী পদে তার মেয়ে তিশা আক্তারের জন্য অধ্যক্ষের কাছে ৫ লাখ এবং সভাপতির কাছে ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয় কিন্তু লিখিত পরীক্ষা নেয়ার পর মৌখিক পরীক্ষা নেবার আগেই তিনি জানতে পারেন তার মেয়ের চাকরি না দিয়ে অন্য আরেকজনকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি সভাপতি ও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কেউই কথা বলতে রাজি হননি। পরে লোক মারফত জানান, খুব দ্রুত টাকা ফেরত দেবার ব্যবস্থা করবেন।

রাজা মালিথা বলেন, কয়া মহাবিদ্যালয়ে তার বাবা মৃত অহিরুদ্দিন মালিথা ও তারা সব ভাই মিলে ৯ বিঘা জমি দান করেছেন। তাদের দানকৃত জমির ওপর নির্মিত হয়েছে কলেজ। কিন্তু দাতা সদস্য থেকে ইতিমধ্যে তার বাবার নাম বাদ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরো জানান, টাকা দেবার সময় একই এলাকার শরিফ মালিথা ও কালোয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিলন উপস্থিত ছিলেন। শরিফ মালিথা মুঠোফোনে জানান, কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চুন্নু ও কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের কাছে টাকা দেয়ার সময় তিনি ও মিলন উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে কয়া কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, সভাপতি নিজামুল হক চুন্নু ৩ লাখ টাকা নিয়ে সেখান থেকে আমাকে খরচের জন্য ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

৭ জন প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৯ লাখ টাকা চাকরি দেবার কথা বলে নেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি হতচকিত হয়ে পড়েন এবং কিছুটা ধাতস্থ হয়ে বলেন, এগুলো সঠিক নয়। এ বিষয়ে কয়া কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিজামুল হক চুন্নুর সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জায়েদুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, জেলার কলেজ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো এখন আর জেলা শিক্ষা অফিসের অধিনস্থ নয় তাই এই বিষয়ে কথা বলা সমীচীন নয়।

নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরনের দুর্নীতির তদন্ত করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফলপ্রসূ ব্যবস্থা না নেয়ায় আমি এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না।


সর্বশেষ সংবাদ