২০ মার্চ ২০২১, ১৪:০৯

তনুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ, এখনো বিচারের অপেক্ষায় পরিবার

সোহাগী জাহান তনু  © ফাইল ফটো

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ৫ বছর পূর্ণ হলো আজ শনিবার (২০ মার্চ)। কিন্তু দীর্ঘ ৫ বছরেও হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি।

শুরুতে পুলিশ, ডিবি ও পরে সিআইডি মামলা তদন্ত করেও কোনো কূল-কিনারা মেলেনি এখনো। সর্বশেষ পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে গত বছরের ২১ অক্টোবর তনু হত্যা মামলার নথি পিবিআই-ঢাকা কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।

তনুর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরে তাদের গ্রামের বাড়িতে শুক্রবার বাদ জুমা মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, বড় ভাই নাজমুল হকসহ পরিবারের লোকজন ও এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি বাসায় প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে তনু নিখোঁজ হয়। পরে রাতে সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

একই বছরের ৪ এপ্রিল ও ১২ জুন দুই দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তনুর মৃত্যুর কারণ খুঁজে না পাওয়ার তথ্য জানায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তরের পর এরই মধ্যে ৩ দফায় কুমিল্লা সেনানিবাসে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ তনুর পরিবারসহ সাক্ষীদের সাথে কথা বলেছেন পিবিআই-ঢাকার পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান।

তিনি মুঠোফোনে বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে অনেকের সাক্ষ্য নেয়া হচ্ছে এবং তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আমাদের সিনিয়র অফিসাররা পুরো বিষয় মনিটরিং করছেন।


তিনি আরও বলেন, তনুর ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে সিআইডি দেশের বাইরে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে অগ্রগতি জানার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখনও প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা আমাদের সাক্ষ্য গ্রহণসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এরপর থেকে আর কিছুই জানি না। এবার পিবিআইয়ের তদন্তে আমার মেয়ে হত্যায় জড়িতরা শনাক্ত ও গ্রেফতার হবে বলে আশা করছি।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, কতবার কত স্থানে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি তার হিসাব নাই। মামলার কোনো অগ্রগতি কেউ জানায় না। তনুর মৃত্যুবার্ষিকী এলে সাংবাদিকরা খোঁজ-খবর নেয়, আর কেউ খবর নেয় না।

তিনি আরও বলেন, ডিএনএ রিপোর্ট আসতে ৫ বছর লাগার কথা না। ন্যায় বিচার পাব এমন কথা সবাই বলে আসছে। অজ্ঞাত কোনো নম্বর থেকে মোবাইলে রিং এলেই ছুটে যাই, এই বুঝি মেয়ের ঘাতকদের আটক করার কোনো খবর এল। এখন আল্লাহর উপরই বিচার ছেড়ে দিয়েছি।