চাকরির আবেদন করায় গৃহবধূর চোখ উৎপাটনের চেষ্টা করলেন স্বামী
মাদারীপুরের কালকিনিতে চাকরি করতে চাওয়ার অপরাধে ও যৌতুকে দাবিতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ীর লোকজন গৃহবধূর দু’চোখ উৎপাটনের চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত গৃহবধূ সাদিয়া আক্তার পশ্চিম বনগ্রামের কৃষক বারেক চৌকিদারের মেয়ে ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী।
শনিবার (১৩ মার্চ) গৃহবধূর দু’চোখ ক্ষতিগ্রস্তের ঘটনার পর তিন দিন পার হলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি। গুরুতর আহত গৃহবধূকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও ওই নির্যাতিতার পরিবার জানায়, প্রায় এক বছর আগে কালকিনি উপজেলার পশ্চিম বনগ্রামের নার্সিং কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া আক্তারের সাথে একই উপজেলার ধুলগ্রামের কাসেম মোল্লার সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছেলে নাসির মোল্লার সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের আগেই সাদিয়া চাকরি করবেন বলে জানায়।
বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় স্বামী নাসির সাদিয়াকে চাকরি না করার ও যৌতুকের জন্য মানসিক চাপ দিতে শুরু করে। তার পরিবার যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় নাসির। সম্প্রতি সাদিয়া চাকরির জন্য আবেদন করেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয় নাসিরসহ তার পরিবার।
সবশেষ গত শনিবার দুপুরে ক্ষিপ্ত হয়ে পরিবারের লোকজনের সহায়তায় সাদিয়ার দু’চোখ উৎপাটনের চেষ্টা চালায় নাসির। এতে সাদিয়ার দু’চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গৃহবধূর চিৎকার শুনে পুলিশের ডিজিটাল যোগাযোগ মাধ্যম ৯৯৯ কল দেয় প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে কালকিনির ডাসার থানা পুলিশ সাদিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিনই তাকে পাঠানো হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা। পরে সাদিয়ার মা পারভীন বেগম নাসির মোল্লাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ডাসার থানায় যৌতুক আইনে একটি মামলা করেন। এ ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো গ্রেফতার হয়নি কোন আসামি।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় ডাসার থানায় নিয়মিত মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।