হাটহাজারী ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামে এক অসহায় নারীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং তিন উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই), তিন কনস্টেবল ও তিন জন সোর্সের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে ভুক্তভোগী নারী এ মামলা করেন।
আসামিরা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরিফুর রহমান রাসেল (৩২), হাটহাজারী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মুকিব হাসান, এসআই মো. সেলিম মিয়া ও কফিল উদ্দীন, কনস্টেবল মো. পারভেজ, মো. সাইফুল ও বৈশাখী রহমান এবং পুলিশের সোর্স মো. রিংকু সুলতান (২৫), মো. হেলাল উদ্দীন ও মো. হেলাল (৩৫)।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি ভুক্তভোগী নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ (১) ধারায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগে মামলা করেন। মামলাটি আদালত সরাসরি এফআইআর হিসেবে নেয়ার জন্য হাটহাজারী থানাকে নির্দেশ দেন। পরে থানা অভিযোগটি মামলা আকারে গ্রহণ করেন।
এরপর ভুক্তভোগীকে আরিফুর রহমান রাসেল হাটহাজারী গেস্ট হাউস নামক স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয় পুলিশ সদস্যরা। সে মামলায় ৫ মাস কারাগারে ছিলেন ওই নারী।
মামলার বাদিনী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে বিরোধ, অশান্তি ও সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ না পেয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রাসেলের শরণাপন্ন হলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে আমাকে। পরে উপজেলা সদরের গেস্ট হাউসে ধর্ষণের পর পুলিশের মাধ্যমে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। সে মামলায় পাঁচ মাস কারাগারে ছিলাম। সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।’
বাদীনির আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘ভুক্তভোগীকে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল হাটহাজারী গেস্ট হাউস নিয়ে যায়। সেখানে তাকে পুলিশ সদস্যরা ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। সে মামলায় পাঁচ মাস কারাগারে ছিলেন তিনি। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৩ ও ১৫ ধারায় তিনি মামলা করেছেন। মামলাটি গ্রহণ করে আদালত আদেশের জন্য রেখেছেন।’
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোর্টে মামলা হয়েছে, তবে এখনো কাগজপত্র থানায় এসে পৌঁছায়নি।’