ঢাবি ছাত্রীর ছবি দিয়ে আইডি খুলে প্রেম, শেষে আত্মহত্যা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন এক তরুণী। ২০১৯ সালের নভেম্বরে রাঙামাটির কলেজপড়ুয়া ছাত্র সৌরভের সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ হয় তার। তারপর একসময় পরিচয় গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। তবে সৌরভ ওই তরুণীকে বা তরুণী সৌরভকে কখনো সরাসরি দেখেননি। ভিডিও কলেও কথা হয়নি।
একসময় সৌরভ জানতে পারেন ছবি ও বাস্তবের মেয়েটি এক নয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সৌরভ তাঁদের মেসেঞ্জারের অন্তরঙ্গ কথোপকথন ছড়িয়ে দেন ছবির তরুণীর পরিচিত ব্যক্তিদের মধ্যে। এদিকে ঢাবি পড়ুয়া বান্ধবী নিজের ছবির ছড়াছড়ি দেখে রাগে ফেটে পড়েন। সৌরভের সাথে যোগাযোগ করেন। অনুরোধ করেন ছবিগুলো যাতে সরিয়ে ফেলে।
এমনকি গ্রামের সেই বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে তার ছবি ব্যবহার করে প্রেম করায় শাসিয়ে আসেন। শেষে আত্মহত্যা করেন ওই তরুণী। সিআইডির তদন্তে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
গত বছরের ৮ নভেম্বর নিজের মেয়ের আইডি হ্যাক হয়েছে মর্মে সাতক্ষীরা থানায় জিডি করেন তরুণীর বাবা। এ ঘটনার পরদিনর ৯ নভেম্বর সকালে নিজের ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের দাবি, সৌরভের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে দেওয়া এবং ঢাবি পড়ুয়া বান্ধবীর শাসানিতে অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন, এমন অভিযোগ এনে তরুণীর এক বান্ধবীসহ তিন-চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার বাবা।
এ ঘটনায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে সৌরভকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজওয়ানুজ্জামানের কাছে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে পুরো ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন ওই তরুণ।
সিআইডির অতিরিক্ত উপপুলিশ সুপার মাহমুদুল ইসলাম তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর থেকে তাঁরা এই আত্মহত্যার ঘটনা জানতে পারেন। এরপর ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তারা। কারণ, সৌরভ দাস গুপ্ত তার নিজের মুঠোফোন থেকে কখনোই ওই তরুণীর হ্যাক করা ফেসবুক আইডি ব্যবহার করেননি।
তিনি জানান, পরবর্তীকালে আইপি লগ বিশ্লেষণ করে সৌরভের এক বন্ধুকে আটক করেন তাঁর। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সৌরভকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও জানান তিনি।