৩২ নেপালি শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে বের করে দিল কর্তৃপক্ষ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:১২ AM , আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:২৬ AM
রংপুরের বেসরকারি কলেজ নর্দান মেডিক্যাল কলেজের ৩২ জন নেপালী শিক্ষার্থীকে মাধ্যরাতে হোস্টেল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বের করে দিলে সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে বাধ্য হয়ে দেশীয় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় নেপালীরা রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির বিএমডিসি’র অনুমোদন নেই। এরপরও বিভিন্ন মামলার কাগজপত্র দেখিয়ে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে আসছে তারা। কিন্তু পাস করার পরেও ইন্টার্নশীপ করতে পারেননি। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনসহ অন্য প্রতিষ্ঠানে মাইগ্রেশনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন তারা। এর মাঝেই রবিবার মধ্যরাতে নেপালি শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হয়।
ভূক্তভোগীরা জানান, অনুমোদনহীন কলেজটি বন্ধ ঘোষণা ও মাইগ্রেশনের জন্য পাঁচ দিনব্যাপী আন্দোলনের কারণে নর্দান মেডিক্যালে পড়ুয়া নেপালী শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মালিকপক্ষ কৌশলে রাত ১১টার দিকে হোস্টেল থেকে হুমকি ধামকি দিয়ে তাদেরকে বের করে দেয় বলে তারা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা জানান, এ পরিস্থিতিতে নেপালী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা কোনো সাড়া মিলছে না। বরং নেপালী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করায় কর্তৃপক্ষের ভাড়াটিয়া গুন্ডাবাহিনী হুমকি দিচ্ছেন। এতে তারাও রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।
নর্দান মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক আফজাল হোসেন এ অভিযোগ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেছেন, নেপালী শিক্ষার্থীদের আবাসিক হোস্টেল হিসেবে চারতলা ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার ফ্লাট ভাড়া নেওয়া হয়। ১১ মাসের ভাড়া বাকি থাকলেও কিছু টাকা পরিশোধ করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা সাজিয়েছে অসাধু মহল। দেশের সম্মান রক্ষায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের টিউশন ফি মওকুফ করা হয়েছে। তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
তবে ভবন মালিক নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, তিনটি ফ্লাটের মাসিক ভাড়া ৬৫ হাজার টাকা করে আট মাসের ভাড়া বকেয়া আছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবগত করলেও এ নিয়ে তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে ব্যাংক ঋণের বোঝা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীদের আগে থেকেই বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। রবিবার রাতে শিক্ষার্থীরা বাইরে গেলে মূল গেটে তালা লাগিয়ে দেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নেপালীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় তারা সবসময় সচেষ্ট আছেন। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে।