ফল পাল্টাতে ব্যর্থ হয়ে নিজেই প্রতারণার ব্যবসা খুলে বসেন তপু
মাধ্যমিক পরীক্ষায় খারাপ করার পর ফল পাল্টাতে ফেসবুকে পোস্ট করে যোগাযোগ করেন নরসিংদীর সৈকত সৈকত হোসেন ভূঁইয়া ওরফে তপু। ভালো ফলের আশায় কয়েক হাজার টাকা খরচ করেও ফল আর পাল্টাতে পারেননি। প্রতারিত হয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে এসে নিজেই প্রতারণার ব্যবসা খুলে বসেন তপু। হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।
সৈকত হোসেন ভূঁইয়া ওরফে তপু (২০) নামে ওই ব্যক্তিকে সোমবার দুপুরে রাজধানীর রিজেন্সি হোটেলের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগ ডিবি। এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তপুর বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা হয়েছে।
ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার এসএম রেজাউল হক জানান, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিবের ছবি ব্যবহার করে একটি দল ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রেজাল্ট পরিবর্তনের নামে প্রতারণা করছে বলে তারা জানতে পারেন।
জানা গেছে, জিমেইলে বিভিন্ন নামে প্রায় ৩০টি একাউন্ট খোলেন তপু। ফেসবুকেও খোলেন ২০ একাউন্ট। এসব একাউন্টের প্রোফাইল পিকচারে ব্যবহার করেন শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, পিএসসির চেয়ারম্যান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের ছবি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তপু জানায়, আমি ২০১৮ সাল থেকে এ পদ্ধতিটা শিখছি। তারপর ২০১৯ সালের এপ্রিলে এক মাস করেছি এটা। এ এক মাসে তেমন টাকা আয় করতে পারেনি। তারপরে শুরুটা হয়। এখানে প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকা আয় হতো। জমানোর মত টাকা হয়নি। প্রতিদিন আসতো প্রতিদিন খরচ হয়ে যেত। আমি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ভালোভাবে এটা শুরু করেছি। এর আগে দুই বছর কিভাবে করতে হয় এ পদ্ধতিটা শিখছি।
প্রতারণার পদ্ধতি সম্পর্কে তপু বলেন, পদ্ধতিটা হলো এডিটেড ছবি দিয়ে কিভাবে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হয় সেটা শিখছি। ফল পাল্টানোর পোস্ট দেখে হাজারো শিক্ষার্থী তপুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফল পাল্টানোর প্রমাণ হিসাবে নানাজনের স্ক্রিনশট দেখাতাম। তারপর আগ্রহীদের কাছ থেকে বিকাশ-রকেটের মাধ্যমে টাকা নেয়া শুরু করি। তারপর টাকা নেয়া শেষে তাদেরকে ব্লক করে দেই।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এরকম প্রতারকরা প্রতারণার উর্বর ক্ষেত্র পাওয়ার কারণ হচ্ছে আমাদের অনেক অভিভাবক অন্ত্যান্ত লোভী। তাদের সন্তানরাও লোভী হওয়ার কারণে মেধাশূন্য হয়। তারা পড়াশোনা করে যোগ্যতা দেখিয়ে ভালো রেজাল্টের জন্য চেষ্টা করে না। তারা ফলাফল কিনে নিতে চায়।