ধণাঢ্য পরিবারের ছোট ছেলে হওয়ায় বেশি আদর পেতেন দিহান
রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ‘ও’ লেভেলের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তানভীর ইফতেখার দিহান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তবে তার সঙ্গে আটক তিন তরুণকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় ওই ছাত্রীর গ্রামে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত ফারদিন ইফতেখার দিহানের কঠোর শাস্তিসহ অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকলে তদন্তপূর্বক তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এদিকে দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত দিহানের নানা অপকর্মের খবর সামনে আসছে। এ ধরনের অপকর্ম সে আগেও করেছে বলে জানা গেছে। বাড়িতে কেউ না থাকলে বন্ধুদের নিয়ে আসতো বাড়িতে। এরপর চলতো ফুর্তি। ওই বাড়ির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা গণমাধ্যমকে এমন তথ্যই জানিয়েছেন।
দিহানের বাবা অবসরপ্রাপ্ত জেলা রেজিস্ট্রার আবদুর রউফ সরকার। তিন সন্তানের মধ্যে দিহান ছোট হওয়ায় একটু বেশি আদুর পেতেন। বাসা ফাঁকা থাকলেই বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে আসতেন। তার বিরুদ্ধে আগেও মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ মিলেছে। দিহানের বাসার কেয়ারটেকার মোতালেব গণমাধ্যমকে এমন তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাসা ফাঁকা থাকলে দিহান বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে বাসায় আসতো। তবে হত্যা বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটবে, তা তিনি ধারণাও করেননি। আনুশকা যেদিন হত্যার শিকার হয় সেদিন কেয়ারটেকার দুলাল দায়িত্বে ছিলেন। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন বলে মোতালেব জানান।
দিহানের বড় ভাই সুপ্তর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে স্ত্রী হত্যার। তার বাবা আবদুর রউফের ঢাকা ও রাজশাহীতে বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। তিনি বড় ছেলে সুপ্তসহ রাজশাহীতে থাকেন। মেঝ ছেলে ও দিহান তাদের মায়ের সঙ্গে থাকেন কলাবাগানে।
ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দিহানকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের বাবা। পুলিশ বলছে, এ মামলার তদন্ত চলছে। এতে আর কেউ জড়িত কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা আছে, দিহান গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ওই স্কুলছাত্রীকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে মোবাইল ফোনে ডেকে বাসায় নিয়ে যায়। এরপর ফাঁকা বাসায় মেয়েটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ রক্তক্ষরণের কারণে মেয়েটি অচেতন পড়ে।
তখন বিবাদী ধর্ষণের বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য মেয়েটিকে নিয়ে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যায়। সেখানে ভিকটিমের মৃত্যু হয়। সংবাদ পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত হাসপাতালে যায়।