ডাক্তার-শয্যা কিছুই মেলেনি মুক্তিযোদ্ধার, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু
গাজীপুরে হাসপাতালে শয্যা ও চিকিৎসা না পেয়ে পরপারে চলে গেলেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত মুক্তিযোদ্ধার স্বজনরা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ফকির (৮৫) গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার খোদাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
মহান বিজয় দিবসের আগের দিন মঙ্গলবার শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ফকিরের ছেলে মামুন ফকির জানান, মহান বিজয় দিবসের আগের দিন মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গুরুতর অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসার জন্য গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। এ সময় সেখানে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না।
এক পর্যায়ে তার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর হাসপাতালের কেবিন বা ওয়ার্ডে শয্যা দিতে বললে জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয় হাসপাতালের কোনো শয্যা খালি নেই। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলে তাকে কর্তব্যরত নার্সরা হাসপাতালের বারান্দায় মেঝেতে একটি চাদর বিছিয়ে দেন।
হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় অবস্থান করার মতো পরিবেশ ও চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতাল থেকে তার বাবাকে কাপাসিয়ায় বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। চলে আসার আগে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় বিজয় দিবসের দিনও তাকে চিকিৎসা দেয়ার মতো ‘বড় ডাক্তার’ হাসপাতালে থাকবেন না।
তিনি আরও জানান, তার বাবা একজন হৃদরোগী ছিলেন। কাপাসিয়া থেকে তার বাবাকে মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর তার বাবাকে চিকিৎসা দেয়ার মতো চিকিৎসক ছিলেন না। তার বাবা যে মুক্তিযোদ্ধা তার প্রমাণপত্রও চায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে মোবাইল ফোনে তোলা সনদের ফটোকপি দেখানো হয়।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কামন্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সাংসদ কাজী মোজাম্মেলক হক জানান, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিজয়ের মাসেও হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়া দুঃখজনক। এ ঘটনায় দাীয়দের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. হাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি বৃহস্পতিবার শুনেছেন। বিস্তারিত জেনে এ ব্যাপারে কারো দায়িত্বে অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।