ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীরা
নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ ২৪ লক্ষাধিক টাকাসহ প্রবাসীর স্ত্রীকে বাগিয়ে নেয়ার ঘটনায় মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
বৃহস্পতিবার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সভা কক্ষে প্রবাসীর বাবা আবুল হাসেম কাজী এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
লিখিত বক্তব্যে হাসেম কাজী উল্লেখ করেন, ‘২০০৩ সালে আমার কুয়েত প্রবাসী ছেলে মোতালেব কাজীর সাথে আসমা খানম লাকীর বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২ সন্তানও রয়েছেন। বিয়ের পরে মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ এর সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে লাকি। বিষয়টি একাধিকবার আমাদের কাছে ধরাও পড়ে।
তবে দুটি শিশু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে লাকীকে সুযোগ দেয়া হয়। এমনকি সে নিজেও পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে কাজী মুরাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না বলে শপথ করে। কিন্তু এর পরেও গোপনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক অব্যাহত রাখে।
তিনি জানান, বিয়ের পরে আমার প্রবাসী ছেলে মোতালেব কাজী তার স্ত্রী আসমা খানম লাকীর নামে খোলা ব্যাংক হিসাব নম্বরে টাকা পাঠানো শুরু করে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ লাকিকে পরকীয়ার ফাঁদে ফেলে বিদেশ থেকে পাঠানো মোতালেবের কষ্টার্জিত টাকা হাতিয়ে নেয়।
সবশেষ ১৬ নভেম্বর কাজী মুরাদ নগদ ৫০ হাজার এবং ব্যাংকে থাকা ২০ লক্ষ টাকা ও স্ত্রী ও কন্যা সন্তানের জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো ৪ লক্ষ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকারসহ পুত্রবধূ আসমা খানম লাকীকে নিয়ে পালিয়ে যায় কাজী মুরাদ। পরে তারা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে।
কাজী মুরাদ পরকীয়ার ফাঁদে ফেলে শুধুমাত্র প্রবাসীর ১৭ বছরের সংসারই ভাঙেনি বরং গৌরব ঐতিহ্যের সংগঠন ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঘটনায় কাজী মুরাদ ও আসমা খানম লাকীর বিচার এবং অর্থ সম্পদ ফেরত পেতে ১৭ নভেম্বর মুলাদী থানায় মামলা নিয়ে যাই।
কিন্তু কাজী মুরাদ ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা না নিয়ে নামমাত্র একটি অভিযোগ গ্রহণ করেন। আমরা কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও জেলার সভাপতি-সম্পাদক বরাবর অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু আদৌ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ কারণে মুরাদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে দেশে ফিরতে পারছে না আমার অসহায় ছেলে। আমরাও আছি নিরাপত্তাহীনতায়।
হাসেম কাজী অভিযোগ করেন, অভিযোগ দেয়ার ঘটনা জানাজানি হলে কাজী মুরাদ আরও ক্ষুব্ধ হয়। সে আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পাহারা বাসিয়ে টানা ১৫ দিন গৃহবন্ধী করে রাখে। এ কারণে ইচ্ছা থাকতেও আমরা আদালতের দারস্থ হতে পারিনি। গত বুধবার স্থানীয়দের সহায়তায় কোন মতে পালিয়ে বরিশালে এসে আত্মগোপন করি এবং সাংবাদিকদের দারস্থ হই।
এসব কারণে জীবনের নিরাপত্তা, প্রবাসী পুত্রের কষ্টার্জিত অর্থ ও আদরের দুই নাতি-নাতনিরদের ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন পরিবিক্ষণ কমিটির মন্ত্রী মর্যায় আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি ও বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় ও বরিশাল জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ’র কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।