বাল্যবিয়েতে অসম্মতি, স্কুলছাত্রীকে ফুসলিয়ে অপহরণ
বাল্যবিয়েতে অসম্মতি থাকায় পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মারিয়া খাতুন (১৩) নামে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে অপহরণ করেছে তার নিকটতম স্বজনরা। বুধবার দুপুরে ওই স্কুলছাত্রীকে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বিবি স্কুল এন্ড কলেজ এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত মারিয়া বিবি স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী ও বেতুয়ান গ্রামের মৃত আজিজুল হকের মেয়ে। এ ঘটনায় মারিয়ার মা আসমা খাতুন ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, মারিয়ার মায়ের চাচাতো বোন নুরজাহান বেগম তার ভাগিনা রনি আহমেদের (২৫) সঙ্গে মারিয়াকে বিয়ে দেওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু বিয়ের বয়স না হওয়ায় মারিয়াকে বিয়ে দিতে অসম্মতি জানায় তার মা আসমা খাতুন। এতে গত কয়েকদিন ধরে নুরজাহান ও তার স্বজনরা আসমা খাতুনকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
এক পর্যায়ে বুধবার মারিয়া বিদ্যালয়ে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে গেলে নুরজাহান বেগম বেড়ানোর কথা বলে তাকে ফুসলিয়ে স্কুল থেকে বাইরে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে রনি ও নুরজাহানসহ ৫/৬ জন মারিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। রনি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের মমতাজ আলীর ছেলে। পরে বিকাল ৪টা পার হলেও মারিয়া বাড়ি না ফেরায় দুশ্চিন্তায় পড়ে তার মা। তখন বিদ্যালয়ে এসে অপহরণের ঘটনাটি জানতে পারে তিনি। এরপর রাতে আসমা খাতুন ভাঙ্গুড়া থানায় গিয়ে রনি ও নুরজাহান বেগমসহ ৬ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বেতুয়ান গ্রামের বাসিন্দা ও দিলপাশার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান আলী জানান, মেয়েটিকে তার খালা নুরজাহান বেগম সঙ্গে নিয়ে যাওয়ায় স্কুলের আশেপাশের লোকজন বুঝতে পারেনি যে তাকে অপহরণ করা হচ্ছে। কিন্তু পরবর্তীতে স্কুল থেকে একটু দূরে গিয়ে কয়েকজন বখাটে মারিয়াকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। পরে ভাঙ্গুড়া ও আশেপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গুড়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই নাজমুল কাদের বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরেই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য আশেপাশে থানাসহ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই মেয়েটিকে উদ্ধার করে আসামিদের আটক করা হয়।