জমি দখলে গিয়ে নিহত হলেন ছাত্রলীগ নেতা
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরীর পক্ষে বিরোধপূর্ণ জমি দখল করতে গিয়ে মো. সোহেল রানা (২৭) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাতে চকরিয়া পৌর শহরের ভরামুহুরী এলাকায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। হামলার ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে দশজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নিহত সোহেল রানা চকরিয়া পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক। তিনি পৌরসভার পালাকাটা এলাকার ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. রকিবের ছেলে। চলতি মাসেই তার বিয়ে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, চকরিয়া পৌর শহরের ভরামুহুরী এলাকার ৬ শতক জমির মালিকানা দাবি করে আসছিলেন চকরিয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী এবং স্থানীয় ঠিকাদার নুরুল আলম দুইজনই। বিরোধপূর্ণ জমিটি নুরুল আলমের দখল রয়েছে।
বিরোধ নিরসনে দুই পক্ষের মাঝে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। তবে দাবির পক্ষে যৌক্তিক কোনো ধরনের কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারলেও জায়গার মালিকানা দাবিতে অনড় আওয়ামী লীগের নেত্রী জেসি চৌধুরী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুই পক্ষের মাঝে আবারো বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, শনিবার রাতে একদল সশস্ত্র লোককে ওই জায়গা দখল করতে পাঠান আওয়ামী লীগ নেত্রী জেসি চৌধুরী। নুরুল আলমের লোকজন তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে জেসির পক্ষের লোকেরা গুলি চালায়। এতে আহত হন নুরুল আলমের পক্ষের বেশ কয়েকজন। তারা ভয়ে জমি ছেড়ে পালালেও রাতের আঁধারে এলোপাতাড়ি গুলির শব্দ শুনে ক্ষেপে যান স্থানীয়রা। এলাকাবাসী জড়ো হয়ে সশস্ত্র দখলদারদের ওপর চড়াও হয়।
দলবদ্ধ এলাকাবাসীকে দেখে জেসির লোকজন পালালেও সোহেল আটকা পড়েন। বিক্ষুব্ধ লোকজন সোহেলকে পেছন থেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। বেদম প্রহারে আহত হন সোহেল। খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চকরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।