নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে যা বললেন সেই সাংবাদিক সরওয়ার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ০৮:২৮ AM , আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৪১ AM
চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ হওয়া সাপ্তাহিক ‘আজকের সূর্যোদয়ের’ স্টাফ রিপোর্টার গোলাম সরোয়ার অজ্ঞান অবস্থায় নিখোঁজের চার দিন পর গত ১ নভেম্ববর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরার একটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় বিলাপ করে বার বার ‘মাইরেন না, আমি আর নিউজ করব না’ বলে কান্না করছিলেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনার পর নির্যাতিত সেই সাংবাদিক জানান, ‘আর নিউজ করবি কি না বল? এ কথা বলতে বলতে আমাকে সাত-আট ঘণ্টা মারধর করেছে। তোদের কোনো নিরাপত্তা নাই, তোরা কী করতে পারবি? কিন্তু কোন নিউজের কারণে আমাকে অপহরণ করা হয়েছে, তা বলতে পারছি না। আমাকে কোন জায়গায় আটকে রাখা হয়েছিল, তাও বুঝতে পারিনি। তবে যেখানে আটকে রেখেছিল, সেখান থেকে ট্রেনের শব্দ শোনা গেছে।’
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর রাতে নগরের বাসা থেকে বের হয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন তিনি। তাকে গত রবিবার (১ নভেম্ববর) সীতাকুণ্ড থেকে অস্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সরওয়ার গতকাল সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘চন্দনাইশ উপজেলায় নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য বুধবার রাত ১২টার দিকে নগরীর ব্যাটারিগলির বাসা থেকে বের হই। বাস ধরতে শাহ আমানত সেতু এলাকায় যাওয়ার জন্য ১০০ টাকায় একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে উঠি। সেখানে আরেকজন লোক উঠে আমাকে অজ্ঞান করে নিয়ে যায়। মোটরসাইকেল থেকে আরেকটি অ্যাম্বুল্যান্স জাতীয় কোনো গাড়িতে করে আমাকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। একটি বাসায় নিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করা হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে বাসায় আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল, সেখানে চারজন ছিল। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় আর অন্যরা শুদ্ধ বাংলায় কথা বলছিল। আমাকে ধরে অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে শরীরে কাপড় জাতীয় কিছু একটা মুড়িয়ে কাঠের তক্তা ও বেল্ট দিয়ে মারধর করা হয়েছিল।’
সরওয়ার আরো বলেন, ‘মারধরের সময় ওই ঘরে থাকা লোকজন বাইরের কারও সঙ্গে ‘স্যার’ সম্বোধন করে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। বলছিলেন ‘স্যার রাখব নাকি ফেলে দিব?’ অন্য প্রান্ত থেকে বলে, ফেলতে হবে না, তারে দিয়ে অন্যদের থ্রেট দেওয়া দরকার, সে ‘তেনাফাডা সাংবাদিক’ তাকে কেন মারবি? তারে আনা হয়েছে সে বেশি উড়ছে সে জন্য।’