যে কারণে শ্বশুরবাড়িতে এসে ঘুমন্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করল স্বামী
সুনামগঞ্জ জামালগঞ্জে পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও দাম্পত্য কলহের জের ধরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী সামিয়া আক্তারকে (২০) গলা কেটে হত্যা করেছেন স্বামী জামাল উদ্দিন। শুক্রবার রাত ১টার দিকে উপজেলার মামুদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ তাকে আটক করে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত জামাল উদ্দিন সদর উপজেলার গৌরাঙ্গ ইউনিয়নের ইচ্চারচর গ্রামের আব্দুস ছোবানের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের বাবার বাড়ি সূত্রে জানা গেছে, এ বছরে মার্চ মাসে জামালগঞ্জ উপজেলার ভিমখালী ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের প্রবাসী গোলাম জিলানীর মেয়ে সামিরা বেগমকে বিয়ে করেন জালাল উদ্দিন। মেয়ের বাবা প্রবাসী হওয়ায় যৌতুকের জন্য প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন স্বামী। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। নির্যাতন সহ্য করতেনা পেরে মাস খানেক আগে বাবার বাড়ি চলে যান সামিয়া।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যান ঘাতক জালাল। কিন্তু স্ত্রীর স্বজনরা জালালের বাবা ও মা ছাড়া তাদের মেয়েকে স্বামীর হাতে তুলে দেবেন না বলে জানালে ক্ষুব্ধ হন জালাল। রাতে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লে তিনি ঘুমন্ত স্ত্রীর ওপর ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে বাড়ি থেকে হাওরের দিকে পালানোর চেষ্টা করে।
এ সময় হাওরে মাছ ধরায় নিয়োজিত গ্রামের জেলেরা জালাল উদ্দিনকে আটক করেন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গুরুতর আহত সামিয়াকে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে আজ শনিবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহত সামিয়া আক্তারের দাদা গফুর মিয়া।
এদিকে নিহত সামিয়ার দুলাভাই নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই জালাল সামিয়াকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করত। তার নির্যাতন সইতে না পেরে গত মাসে বাবার বাড়ি চলে আসে সামিয়া। এখানে এসে শুক্রবার রাতে তাকে জবাই করে হত্যা করেছে ঘাতক জালাল।’
জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, নিহত স্ত্রীর সামিয়া আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক জালাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার দায়ের হয়েছে, তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।