মেরে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর মৃতদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় স্থানীয়দেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তদন্তে ঘটনার সঠিক কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয়দের কেউ কেউ নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পুলিশ সুপার বলেছিলেন, তারা প্রাথমিকভাবে জেনেছেন, নিহত ব্যক্তিসহ দু’জন পাটগ্রামের বুড়িমাড়ী এলাকায় একটি মসজিদে আছরের নামাজ পড়তে গিয়েছেলেন। নামাজের পর তিনি কোরআন শরিফ রাখার জায়গায় পা দিয়ে অবমাননা করেছেন- এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তখন শত শত মানুষ জড়ো হয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং মৃতদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
তবে তিনি জানিয়েছেন, এখন স্থানীয় লোকজন পুলিশের কাছে ঘটনা সম্পর্কে নানারকম তথ্য দিচ্ছে। পুলিশ এখন ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছেন। পিটিয়ে হত্যা এবং মৃতদেহ আগুন দিয়ে পোড়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। তবে ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ এখনও সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজগুলো দেখে জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তারা। ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা। তবে নৃশংস ওই ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে তিনি জানান।
গতকালই তোহিদুন্নবী নামের এক ব্যক্তি নিজেকে নিহতের ভাই দাবি করেছেন । তিনি বলেছেন, তাদের বাড়ি রংপুরে। তার ভাইকে পিটিয়ে হত্যার পর আগুন দিয়ে পোড়ানোর এমন ঘটনা শোনার পর তারা হতবাক হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তি আবু ইউনুছ মোঃ সহিদুন্নবী জুয়েল (৫০) রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে। পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি নিহত হন। নিহত সহিদুন্নবী বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন বলেও তথ্য মিলেছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের ছাত্র ছিলেন, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।