নবাব সলিমুল্লাহর নাতি তিনি, দুবাইয়ে আছে সোনার কারখানাও!
স্যার নবাব সলিমুল্লাহর ‘নাতি’ বলে পরিচয় দিতে তিনি! এমনকি দুবাইয়ে সোনার কারখানা আছে বলে দাবি করতেন। ছিল সশস্ত্র দেহরক্ষী, বাবাও নাকি ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, থাকেন নিউইয়র্কে। এমনকি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের মালিকানা রয়েছে বলেও তাঁর দাবি। এই হাসপাতালে বিনা খরচে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তার নাম আলী হাসান আসকারি।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বুধবার (২৮ অক্টোবর) আসকারিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নিকট থেকে ভুয়া কোম্পানির প্রচারপত্র, নবাব পরিবারের অ্যামবুশ সিল, ওয়াকিটকি, ভিওআইপি সরঞ্জাম, সাড়ে ৩০০ মেডিকেল সনদ, ল্যাপটপ ও কয়েকটি সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে। তিনি মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করতেন। এরপর মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে প্রতারণা করতেন।
প্রতারণার শিকার এবং তার বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী স্কুলশিক্ষক আবদুল আহাদ সালমান বলেন, গত মে মাসে আসকারি ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে নিজেকে নবাব সলিমুল্লাহর নাতি বলে পরিচয় দেন। মাউন্ট এলিজাবেথের সামনে কর্মীদের সঙ্গে ব্যানারসহ ছবিও ছিল তাঁর। পরে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন, একপর্যায়ে তাদের দেখা হয়। তখন আলী হাসান বলেন, মাউন্ট এলিজাবেথে ৪০০ জনকে বিনা খরচে চাকরি দিতে চান। তবে সবাইকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ৮০০ টাকা ও চিকিৎসা সনদের জন্য ৭৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, এ কথায় মুগ্ধ হয়ে ফেনীর ৪০০ যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেন। এরপর থেকেই তিনি লাপাত্তা, কোনোভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে ব্যানারে থাকা সিঙ্গাপুরের নম্বরে ফোন করলে অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, আলী হাসান তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। পরে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন তিনি।
ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) উপকমিশনার মো. মাইফুজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও ধানমন্ডি থানার একটি মামলার ভিত্তিতে এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা আলী হাসান আসকারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মাউন্ট এলিজাবেথের মালিক সেজে অন্তত ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ের সামনে জমা হন।