ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, দায় এড়াতে রোগী স্থানান্তরের চেষ্টা
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ভুল চিকিৎসায় সাবানা বেগম (২৫) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন আল্-মাহ্দী ইসলামী হাসপাতাল এন্ড স্বর্ণা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
এ সময় মৃত্যুর দায় এড়াতে রোগীকে সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরের চেষ্টা চালান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে মৃতের আত্নীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা হাসপাতালটিকে ঘিরে রাখে। খবর পেয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা যায়, রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের মইপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সাবানা বেগম উক্ত হাসপাতালের ডাক্তার ফায়সাল শাহ নেওয়াজের কাছে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রসূতি সাবানার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক সাবানা বেগমের সিজারের তারিখ নির্ধারণ করেন আগামী নভেম্বর মাসের ১১ তারিখ। চিকিৎসকের পরামর্শে বুধবার বিকাল ৩টার সময় সাবানাকে সিজারের জন্য উক্ত হাসপাতালে নিয়ে আসে তার আত্নীয় স্বজনেরা।
মৃত সাবানা বেগমের চাচা মহসিন আলী জানান, সে সময় হাসপাতালের মালিক মনছুর রহমান তাদেরকে দ্রুত সিজার না করলে বাচ্চা ও মায়ের ক্ষতি হবে বলে জানান। এ কারণে তারা সিজারের অনুমতি দিলে সিজার শুরু হয়। সিজারের এক পর্যায়ে ডাক্তার জানায় বাচ্চা ভালো আছে তবে মায়ের অবস্থার খারাপ।
এ সময় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার জন্য একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। সে সময় সাবানা বেগমের আত্নীয় স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা দেখে সাবানা বেগম মারা গেছে। সে সময় তাদের আত্নীয় স্বজনের কান্নাকাটিতে আশেপাশের লোকজন এসে মাইক্রোটিকে আটক করে। পরে পুঠিয়া থানা পুলিশকে খবর দিলে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম ও তার ফোর্স ঘটনা স্থলে আসেন।
মহসিন আলীর সন্দেহ তার ভাতিজি অপারেশন থিয়েটারেই মারা গেছে। মৃত্যুর ঘটনা আড়াল করতে ক্লিনিক মালিক ও ডাক্তার দ্রুত সাবানাকে রাজশাহী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। এছাড়াও ভুল চিকিৎসায় তার ভাতিজির মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে নবজাতক শিশুটি বেঁচে গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে আল্-মাহ্দী ইসলামী হাসপাতাল ছাড়াও পুঠিয়া উপজেলা সদরের অধিকাংশ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে এসবের পরে এর কোনো সুরাহা হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারিতে আনা হয়নি ক্লিনিকগুরোর কর্মকাণ্ডকে।
এসব ক্লিনিক ও বা হাসপাতালে অনঅভিজ্ঞ ডাক্তার বা ক্লিনিক মালিক নিজেরাই আপারেশন করে থাকেন। এতে মাঝে মধ্যেই ঘটে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে। তবে বেশির ভাগ ঘটনায় হাসপাতাল বা ক্লিনিক মালিকেরা অভিযুক্তদের আত্নীয়-স্বজনের সাথে বিশেষ সুবিধায় মীমাংসা করায় মৃত্যুর ঘটনাগুলির সঠিক বিচার হয়না।