ঢাকা সিটির কাউন্সিলর পদ হারাচ্ছেন এমপিপুত্র ইরফান!

ইরফান সেলিম
ইরফান সেলিম  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদবিধারী কর্মকর্তাকে মারধরের অপরাধে সাংসদ হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইরফান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার শাস্তি হওয়ায় তিনি এখন পদে থাকতে পারবেন কিনা- তা খতিয়ে দেখবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তার বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ হলে আর পদে থাকতে পারবেন না বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুসারে, নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হলে তিনি অপসারণযোগ্য হবেন। আইনে আরো বলা হয়েছে, অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তার পদ থাকবে না।

তিনি নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর করে মূলত ফৌজদারি অপরাধ করেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ফলে তার পদে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী আদালত কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত মেয়র বা কাউন্সিলর তার পদে থাকতে পারেন না। এখন ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলে ইরফানকে বরখাস্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

রবিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর ধানমন্ডিতে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়েছিল ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি। এর পর ওই গাড়ি থেকে কয়েক ব্যক্তি নেমে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম নামের ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। সেই গাড়িতে ছিলেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম।

এ ঘটনায় সোমবার ভোরে মামলা হলে বিকালে অভিযান চালিয়ে ইরফান ও তার দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাদের র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ছয় মাস ও অবৈধ মাদক রাখার দায়ে ছয় মাস করে মোট এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে দুজনকে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়টি সরকার সহ্য করবে না। ইরফান নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের মাধ্যমে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। আদালতে বিষয়টি প্রমাণিত হলেই তাকে কাউন্সিলর পদ হারাতে হবে।

কর্মকর্তারা জানান, গত কয়েক মাসে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে শতাধিক জনপ্রতিনিধিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার। জনপ্রতিনিধিদের উচ্ছৃখলতা কোনোভাবে বরদাশত করছে না সরকার।

গত ১৩ অক্টোবর পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বেড়া পৌরসভা মেয়র আবদুল বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া ফরিদপুরের আলোচিত সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন চরভদ্রাসনের ইউএনওকে ফোন করে গালিগালাজ করায় তার নামেও মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন।


সর্বশেষ সংবাদ