ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ: ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতা কারাগারে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুলিশের হাতে আটক বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম ও সংগঠনটির ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হুদাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুই দিনের রিমান্ড শেষে এই দুই নেতাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করলে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর রাতে রাজধানী থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পরেরদিন সোমবার (১২ অক্টোবর) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। কোতোয়ালি থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র অধিকার পরিষদের অব্যাহাতপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সাথে বাদীর পরিচয় হয় এবং তার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে হাসান আল মামুন বাদীকে শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। ফলশ্রুতিতে গত ৩ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে বাদীকে নিয়ে হাসান আল মামুন তার বাসা লালবাগে যেতে বলে। সেখানে বিয়ের প্রলােভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
এরপর তার পরের দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন বাদী। পরবর্তীতে ১২ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাজমুল হাসান সােহাগের মাধ্যমে ভর্তি হন। এরপর থেকে হাসান আল মামুন আত্মগােপনে চলে যান। হাসান আল মামুনের সঙ্গে দেখা করে দেবে বলে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে নাজমুল বাদীকে নিয়ে কোতয়ালী থানার ৫৬৩/৫৬৬ মিউনিসিপাল হোকার্স মার্কেট সদরঘাট হােটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে নিয়া যান সােহাগ। সেখানে বাদীকে নাস্তা করান।
সােহাগ বিভিন্ন প্রলােভন দেখিয়ে কৌশলে লঞ্চে করে বাদীকে চাঁদপুর নিয়ে যান। চাঁদপুর পৌঁছানাের পর হাসান আল মামুনকে দেখতে না পেয়ে বাদীর সন্দেহ হয়। তখন সোহাগকে দ্রুত ঢাকায় ফেরার জন্য বলেন বাদী। সােহাগ বাদীকে নিয়ে বিকেলে লঞ্চের কেবিনে অবস্থান করেন। পরে বাদীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ সময় বাদী কান্নাকাটি করলে সােহাগ তাকে নষ্ট মেয়ে বলে ভয়ভীতি দেখান এবং কান্না করে লাভ হবে না বলেন জানান।
গত ২৯ মে বাদীকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য বিভিন্ন নামে ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন গ্রুপে বাদীর মােবাইল নম্বর ছড়িয়ে দেন সােহাগ। বাদী এ বিষয়ে ২০ জুন নুরুল হক নুরকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানান। পরে নুর বাদীকে তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বস্ত করেন। গত ২৪ জুন নুরুল হক নুর বাদীকে নীলক্ষেতে দেখা করতে বলেন। সেখানে নুর তাকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন এবং বাড়াবাড়ি করলে তার লোকদের দিয়ে বাদীর নামে উল্টাপাল্টা পােস্ট করবে এবং বাদীকে ‘পতিতা’ বলে প্রচারের হুমকি দেন।