‘যখন ডাকব, তখনই চলে আসবি’— ধর্ষণ শেষে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের ভিডিও করে ওই ছাত্রীকে যখন-তখন চলে আসতেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। অভিযোগ ওঠা ওই ধর্ষক রাজধানীর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত শনিবার উপজেলার ধারাবাশাইল গ্রামের ইব্রাহিম হাওলাদার ঠাণ্ডার মাছের ঘেরপাড়ে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আজ সোমবার কোটালীপাড়া থানায় একটি মামলা করেছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা ধর্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। সে রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
মামলা সূত্রে ও ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রী জানিয়েছে, শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় মেধাবিকাশ ডিজিটাল স্কুলের সোহাগ স্যারের কাছ থেকে প্রাইভেট পড়ে স্থানীয় চৌধুরী বাজারে খাতা ও কলম কিনতে যায় সে। এ সময় একই উপজেলার পূর্ণবতী গ্রামের মহাসিন উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আলী হোসাইন হাওলাদার ও একই গ্রামের ইব্রাহিম হাওলাদারের ছেলে মাসুদ হাওলাদার তাকে ভয় দেখিয়ে নৌকায় করে ধারাবাসাইল গ্রামে অবস্থিত ইব্রাহিম হাওলাদারের মাছের ঘেরে নিয়ে যায়।
বিল বেষ্টিত নির্জন ঘেরের একটি টং-ঘরে আলী হোসাইন হাওলাদার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে। এতে ওই স্কুলছাত্রী রাজি না হওয়ায় সে তাকে মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে সে তাকে জোর করে ধর্ষণ করে। এ সময় তার বন্ধু মাসুদ হাওলাদার মোবাইল ফোনে এ দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে। এই ধর্ষণের কথা কাউকে বললে এবং আগামীতে যখন ডাকব, তখনই চলে আসবি; না আসলে এই ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী জানিয়েছে, পরে দুপুর ২টার দিকে সে বাড়িতে আসার পর বিষয়টি তার মাকে বলে। এসময় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি মহল উঠে-পড়ে লাগে। মহলটি সালিসমীমাংসা করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ধর্ষিতার পরিবার রাজি না হওয়ায় তাদের চেষ্টা ভেস্তে যায়। একই দিন সন্ধ্যায় ধর্ষিতার খালু হালিম শাহ বিষয়টি কোটালীপাড়াথানায় জানান।
খালু হালিম শাহ বলেন, ঘটনার দিন শনিবার সন্ধ্যায় আমি কোটালীপাড়ায় থানায় গিয়ে জানাই। কিন্তু এ কয়দিন থানা থেকে কোনোব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পিঞ্জুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাজা হাওলাদার ও সরোয়ার তালুকদার মেয়ের বাবাকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আমরা এতে রাজি না হওয়ায় সোমবার কোটালীপাড়া থানা থেকে পুলিশ এসেছিল। তারা খোঁজখবর নিয়েছে।
কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.জাকারিয়া বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দোষীরা পলাতক রয়েছে। দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আগমীকাল মঙ্গলবার ধর্ষিতাকে ডাক্তারিপরীক্ষার জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। বিষয়টির তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।