০৫ অক্টোবর ২০২০, ১৭:৫৮

সেই পোস্টের এক বছর, লাইক বাড়ছেই

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ ও ফেসবুক স্ট্যাটাস  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার কয়েকটি চুক্তির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। সেই স্ট্যাটাসের এক বছর আজ। দিনটিকে স্মরণ করতে ভোলেননি তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।

ফাইয়াজ সেই স্ট্যাটাস স্মরণ করে আজ সোমবার ফেসবুকে লিখেছেন, আজ সেই ৫ অক্টোবর। এদিন ৫.৩২ মিনিটে দেওয়া পোস্টটিই ছিলো ভাইয়ার জীবনের শেষ পোস্ট। এটার জন্যই তাকে জীবন দিতে হয়।

ফাইয়াজ লিখেছেন, আজ সেই পোস্টের ১ বছর। সেদিন বিকালে সোফায় বসেই আমাদের সামনেই পোস্টটি দিয়েছিলো। মাত্র একদিন পরেই হলে ফেরার সাথে সাথে পরিকল্পিতভাবে তাকে কত নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় তা সবাই দেখেছি।

এদিকে আবরার ফাহাদের দেয়া সেই স্ট্যাটাসের লাইক সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত ওই পোস্টে ৪ লাখ ২৭ হাজার মানুষ প্রক্রিয়া দেখিয়েছেন। ৭০ হাজার বার এ পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে। অন্যদিকে এ পোস্টে সবার মন্তব্য করার সুযোগ না থাকলেও ৬৮ জন মতামত দিয়েছেন।

ফাহাদ সে পোস্টে লিখেছিলেন, ১.৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশেে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।

২.কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।

৩.কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।

হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-

‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।’

এদিকে আবরারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে আজ সোমবার জবানবন্দি দেন হত্যা মামলার বাদী ও আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। এসময় এজাহারের বক্তব্য সমর্থন করে তিনি জবানবন্দি প্রদান করে ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।

বরকত উল্লাহ বলেন, ‘‘আসামিরা আমার ছেলেকে ছয় ঘণ্টা ধরে অমানবিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি আদালতে হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই।’’