নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, এদেরকে খুঁজছে পুলিশ
নোয়াখালীতে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর জড়িতদের ধরতে মাঠে সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের নির্দেশে পুলিশের পাঁচটি টিম মাঠে কাজ করছে। পুলিশ সুপার নিজেই অভিযান তদারকি করছেন বলে জানা গেছে।
নির্যাতনের শিকার নারীর বক্তব্য ও আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছিল অন্তত পাঁচজন। তারা হচ্ছেন দেলোয়ার, বাদল, কালাম, আব্দুর রহিমসহ অপর একজন। আব্দুর রহিমকে (২২) ছাড়াও মো. রহমত উল্যাহ নামে আরও একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত আবদুর রহিমকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়। বাকিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ তবে মামলা হওয়ার বিষয়ে কোনও তথ্য জানা যায়নি।
গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, আরও একজন গ্রেপ্তার
এদিকে, ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় এবং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সবাই একযোগে আওয়াজ তুলেছেন। এ ঘটনায় শিক্ষক, সংবাদকর্মী, মানবাধিকার কর্মীসহ সবাই হামলাকারীদের প্রতি তাদের ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ওই নারীকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছে পুলিশ। এসময় ওই গৃহবধূ জানান, নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২০/২৫ দিন আগে। তখন ভিডিও ধারণ করা হয়। তবে তিনি ভয়ে থানায় অভিযোগ করার সাহস পাননি।
ওই নারী পুলিশকে জানান, বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের বড়খালের পাশে নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার এতে নেতৃত্ব দেয়। ঘটনায় জড়িত ছিল বাদল, কালাম, আব্দুর রহিমসহ অপর একজন। তারা ভিডিও প্রকাশ করে দেবে বলে ভয়ে ছিলেন তিনি।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ওই গৃহবধূর পোশাক কেড়ে নিয়ে অভিযুক্তরা তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে থাকে। এসময় তিনি নিজেকে রক্ষায় সব ধরনের চেষ্টা করেন। এমনকি হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডেকে, পায়ে ধরেও রক্ষা পাননি। বরং দেলোয়ার তার মুখমণ্ডলে লাথি মারে। এছাড়া পা দিয়ে মুখসহ তার শরীর মাড়িয়ে দেয়। ‘ফেসবুক’ ‘ফেসবুক’ বলে চিৎকার করে আরেকজন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্তরা ক্ষমতাসীন কয়েকজন নেতার প্রশ্রয়ে মাস্তানি করে বেড়ায়। তাদের মধ্যে দেলোয়ার হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। তারা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।