০৩ অক্টোবর ২০২০, ২০:৩৮

কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ, সব আসামির দায় স্বীকার

জবানবন্দি শেষে আসামিদের জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে  © সংগৃহীত

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের মামলায় আরও তিন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ শনিবার (৩ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতের তিনজন বিচারকের এজলাসে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তারা। এ নিয়ে ওই মামলায় ছয় আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।

প্রথমে মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেফতার ছাত্রলীগকর্মী রাজনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেন সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমান। সন্ধ্যা ৬টায় রাজনের জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হয়। বিকেল ৫টা থেকে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক মো. সাইফুর রহমানের এজলাসে জবানবন্দি দেন ছাত্রলীগকর্মী আইনউদ্দিন। মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম (তৃতীয়) আদালতের বিচারক শারমিন খানম নীলার এজলাসে জবানবন্দি দেন ছাত্রলীগকর্মী মামলার তিন নম্বর আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি। আইনউদ্দিন ও রনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জবানবন্দি দেন।

পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য ভূষণ চৌধুরী বলেন, গণধর্ষণ মামলার তিন নম্বর আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মামলার সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনউদ্দিন ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এর আগে দুপুর ১টায় কড়া নিরাপত্তায় মামলার তিন নম্বর আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মামলার সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনউদ্দিনকে অতিরিক্ত মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। বিধি অনুযায়ী আদালতে তারা স্বীকারোক্তি দেবেন কি-না তা চিন্তা করে বলার জন্য তিন ঘণ্টা সময় দেন। এরপর বিকেল ৪টা থেকে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শুরু করা হয়। 

এদিকে, শুক্রবার (২ অক্টোবর) রাতে সিলেটের অতিরিক্ত, মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর এবং সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত-২ এর বিচারক মো. সাইফুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামলার ৫ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম।

শনিবার দুপুরে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমান মাসুমের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে ফের তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। আগামীকাল রবিবার এই দুজনের পাঁচদিনের রিমান্ড শেষ হবে।

প্রসঙ্গত, ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে প্রাইভেটকারের মধ্যে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুইজন। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়।

এ ঘটনায় র‌্যাব ও পুলিশ এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত মোট আটজনের সবাইকে ধাপে ধাপে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এর মধ্যে তিনজন শুক্রবার ও অপর তিনজন আজ শনিবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।