২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১০

স্বামীর প্রাইভেটকারেই নববধূকে ধর্ষণ শুরু করে ছাত্রলীগ কর্মীরা!

এমসি কলেজে ধর্ষণে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা  © ফাইল ফটো

সিলেটে নববধূকে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নয়, তার আগেই স্বামীর প্রাইভেটকারে পালাক্রমে ‘নির্যাতন’ শুরু করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মামলার এজাহারে এমন তথ্য জানিয়েছেন বাদি ও নববধূর স্বামী। গত ২৬ সেপ্টেম্বর শাহপরাণ থানায় মামলা করেন তিনি।

এজহারে উল্লেখ করেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে স্ত্রীসহ হযরত শাহপরাণ (র.)-এর মাজার জিয়ারত করেত যান তারা। জিয়ারত শেষে রাত পৌনে ৮ টার দিকে এমসি কলেজের মূল ফটকের সামনে পাকা রাস্তায় গাড়ি রেখে সিগারেট কেনার জন্য নামেন। তখন ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, তারেকুল, মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল, মাহফুজুর রহমানসহ আরো অনেকে স্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন।

স্বামী প্রতিবাদ করলে সাইফুরও অর্জুন চড়-থাপ্পর মারা শুরু করে। তখন স্ত্রীও গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদ করলে আসামিরা স্বামী-স্ত্রীকে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। এসময় তারেকুল ড্রাইভিং সিটে বসে। আর স্বামী-স্ত্রীকে পিছনের সিটে উঠিয়ে সাইফুর ও অর্জুনও তাদের সাথে বসে। মাহবুবুর রহমান ড্রাইভিং সিটের পাশে বসে।

পরে তরিকুল গাড়ি চালিয়ে এমসি কলেজ হোস্টেলের সাত নম্বর ব্লকের পাঁচ তলা নতুন বিল্ডিংয়ের কোনায় খালি জায়গায় দাঁড় করায়। অন্যরা মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে যায়। তরিকুল গৃহবধূর স্বামীর মানিব্যাগের দুই হাজার টাকা এবং মাহবুবুর রহমান নববধূরর কানের দুল ও অর্জুন গলার চেইন কেড়ে নেয়। এসময় চিৎকার করলে তারা নববধূর মুখ চেপে ধরে।

পরে স্ত্রীকে গাড়িতে রেখে সাইফুর, তারেক, রনি ও অর্জুন স্বামীকে ব্লকের পশ্চিমপাশে নিয়ে যায়। এসময় তার স্বামীকে ব্যস্ত রেখে সাইফুর, তারেকুল, মাহবুবুর রহমান ও অর্জুন প্রাইভেটকারের ভিতরেই তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তখন স্ত্রীকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে আসামিরা তার স্বামীকে মারধর করে।

আধঘণ্টা পর স্ত্রী স্বামীর নিকট আসলে আসামিরা প্রাইভেটকার রেখে স্ত্রীকে নিয়ে চলে যেতে বলে। এছাড়া ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে। পরে বাদী স্ত্রীকে নিয়ে হোস্টেলের গেটে যান। পরে অটোরিকশা নিয়ে গিয়ে পুলিশকে সব জানান।

এদিকে, ধর্ষণের সময় পাঁচ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় একজন গেলে তাকে চলে যেতে বলেন আসামিরা। পুলিশের সহায়তায় বাদী পরে গাড়িটি পুলিশকে দেখান এবং দ্বিতীয় তলার ছেলেটিকে শনাক্ত করেন।

হৃদয় পারভেজ নামে ছেলেটি জানায়, সে যখন বারান্দায় আসে তখন তার রুমমেট মাহবুবুর রহমান তাকে চলে যেতে বলে। এসময় হোস্টেলের অন্য ছাত্ররা রনিসহ আসামিদের ছবি দেখায়। ভুক্তভোগী স্বামী-স্ত্রী ছাত্রলীগের ছয় জনকে শনাক্ত করেন। এছাড়া আরও ২/৩ জনের পরিচয় জানতে পারেননি।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গড়ি ও আসামিদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। পরে স্ত্রীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে মামলার এজহার দায়ের করেন স্বামী। এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দারা।