নীলা হত্যায় আসামি গ্রেফতার সংখ্যায় গরমিল, মিজানুর রিমান্ডে

ছবিতে নীলা রায় এবং ঘাতক মিজানুর
ছবিতে নীলা রায় এবং ঘাতক মিজানুর  © টিডিসি ফটো

সাভারে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নীলা রায়কে (১৪) ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় ঘাতক মিজানুর রহমান চৌধুরীর (২১) ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান এ আদেশ দেন।

এদিকে পুলিশের খাতায় আসামি গ্রেফতারের সংখ্যায় গরমিল দেখা গেছে। সাভার মডেল থানা পুলিশের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে মূল অভিযুক্তসহ ৩ জনকে গ্রেফতার এবং এ মামলায় ওইদিন পর্যন্ত মোট ৬ জনকে আটকের কথা নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু শনিবার সকালে সাভার মডেল থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার মূল অভিযুক্ত মিজানকে গ্রেফতারের কথা জানালেও তার ২ সহযোগী সাকিব ও জয়ের গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

গ্রেফতার সংখ্যার গরমিল নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ৬ জনের তথ্যটি সঠিক নয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত নামীয় আসামিসহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার আসামি মিজানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনে বলা হয়, মিজানুর শিক্ষার্থী নীলা রায়কে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করাসহ প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। নীলা এতে রাজি না হওয়ায় তাকে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। ঘটনাটি নীলা তার পরিবারকে জানায়। আর নীলার পরিবার আসামি মিজানুরের বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়। মিজানুরের বাবা-মা এর প্রতিকার না করে বরং উল্টো নীলার পরিবারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বাবা-মার প্ররোচনায় ও অজ্ঞাতনামা আসামি ৩-৪ বন্ধুর সহায়তায় মিজানুর শিক্ষার্থী নীলাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে।

২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নীলা রায় ও তার ভাই অলক রায় (১৯) ওষুধ কিনতে যাওয়ার সময় মিজানুর তাদের রিকশা থামায়। অলক রায়কে মিজানুর বলে, নীলার সঙ্গে তার কথা আছে। তখন অলক রায় একটু দূরে দাঁড়ায়। ওই সময় মিজানুর ভিকটিম নীলার হাত ধরে টেনে কাছেই পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে যায়। এরপর মিজানুর তার কাঁধে থাকা ব্যাগ থেকে ধারালো চাপাতি বের করে উপর্যুপরি নীলাকে কোপাতে থাকে। নীলার চিৎকারে ভাই অলক রায়সহ আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। তারা মিজানুরকে আটকাতে চাইলে এক হাতে চাকু ও আরেক হাতে রক্তমাখা চাপাতি উঁচিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। নীলাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল আসামির রিমান্ড শুনানি করেন। শিক্ষার্থী নীলা হত্যার ঘটনায় তার বাবা নারায়ণ রায় মামলাটি করেন। মামলায় রিমান্ড শুনানি শেষে মিজানুরের সহযোগী সেলিম পালোয়ানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর মিজানুরের বাবা আবদুর রহমান ও মা নাজমুন্নাহার সিদ্দিকা রিমান্ডে আছেন।


সর্বশেষ সংবাদ