খুনী কিশোর গ্যাংয়ের দুই লিডারের কোমরে থাকত পিস্তল
কলেজছাত্র সোহাগ হত্যার প্রধান আসামী মাহবুব ইসলাম ওরফে কাটার রাসেল ও হৃদয়। তাদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। উত্তরা এলাকায় তারা গড়ে তোলে একাধিক কিশোর গ্যাং। আর তাদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন কলেজ ছাত্র সোহাগ। কিশোর গ্যাং-এর দুই সদস্য নিরাপত্তার জন্য সব সময় তাদের কোমরে গোঁজা থাকত বিদেশি পিস্তল।
সোমবার তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। মঙ্গলবার কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা তুলে ধরেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।
তিনি জানান, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে আটটার দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত হয় সোহাগ। ঘটনার পরদিন তার বড় ভাই মেহেদী হাসান সাগর বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় মাহবুবুল ইসলাম রাসেল ওরফে কাটার রাসেল, হৃদয়, সাদ, সাব্বির হোসেন ও সানির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো চার থেকে পাঁচ জনকে আসামি করা হয়।
তিনি জানান, কলেজছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে যেদিন খুন করা হয় সেদিন রিকশার চাকা থেকে ময়লা পানি শরীরে লেগেছিল কাটার রাসেলের। এর জের ধরে সে রিকশাচালককে মারধর করছিল। এ সময় কলেজছাত্র সোহাগ ঐ রিকশার যাত্রী ছিল। সাধারণ বিষয় নিয়ে রিকশাচালককে মারধরের প্রতিবাদ করেন সোহাগ।
প্রতিবাদ করায় সোহাগের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল তার গ্রুপের নাদিম, সানি, মেহেদী, সাদ, সাব্বিরকে ফোন করে ডেকে এনে সোহাগকে মারধর করে এবং এক পর্যায়ে তার পেটে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা সোহাগকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, এই ঘটনার পরে রাসেল ও হৃদয় নিজেরা আত্মগোপনে যায়। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে হৃদয় ও রাসেল দেশ ছাড়ার পরিকল্পনাও করে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা বারবার স্থান পরিবর্তন করে আসছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন তারা। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তলসহ আট রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
কিভাবে গ্রেফতারকৃতরা বিদেশি পিস্তল সংগ্রহ করেছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তদন্ত চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো বড় সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের এসব অস্ত্র সরবরাহ করে থাকতে পারে। আশা করছি খুব শিগিগরই গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব বিষয়ে জানতে পারব।