বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙে ও গাছ কেটে নিয়ে গেলেন আ’লীগ নেতা

  © সংগৃহীত

সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবন ভেঙে ও গাছ কেটে নিয়েছেন মোকাব্বর হোসেন নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা। এছাড়া নিলাম ডাক ছাড়াই সরকারি ওই বিদ্যালয়ের প্রায় ৪ লাখ টাকার সম্পদ লোপাট করেছেন তিনি।

তিনি উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, গাড়ীদহ ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি এবং ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

জানা গেছে, ১৯১৪ সালে ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের পূর্ব ও পশ্চিমপাশে একটি করে পাকা ভবন রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ পাশে সেমি পাকা ৪টি শ্রেণিকক্ষ আছে। আর ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন ফলজ-বনজ গাছপালা রয়েছে। বর্তমানে মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজের জন্য বিদ্যালয়ের ১১ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

এ কারণে বিদ্যালয়ের পশ্চিমপাশের প্রধান ফটকসহ একতলা বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন ও সেমি পাকা দুইটি ক্লাসরুমসহ সব স্থাপনা সরিয়ে নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া বড় বড় সাতটি গাছও কেটে ফেলতে হবে। এই অজুহাতে তিন দিন ধরে অবৈধভাবে বিদ্যালয়ের প্রায় ৪ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে গেছেন সভাপতি মোকাব্বর হোসেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা মোকাব্বর হোসেন বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে বিদ্যালয়ের সম্পদ নিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পরে এসব সম্পদ কিভাবে বিক্রি করবেন তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। আমি শুধু শিক্ষা কর্তকর্তার নির্দেশ পালন করেছি মাত্র।

বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির মেয়াদও উর্ত্তীণ হয়ে গেছে। এ কারণে কমিটির কোনো বৈঠক করা সম্ভব হয়নি। তাই বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙা ও গাছ কাটার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তারপরও সভাপতি আমাকে না জানিয়ে বিদ্যালয়ের সম্পদ নিয়ে গেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনা খাতুন জানান, নিলাম ডাক ছাড়াই বিদ্যালয়ের ভবন ভাঙা হলেও ভবনের মালামাল ও কেটে ফেলা গাছের অংশ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সভাপতিকে মৌখিকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত আলী শেখ বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ, ভবন ও ক্লাসরুম নিয়ম অনুযায়ী অপসারণ করার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে আইন মানা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি সরকারি সম্পদ লুটপাট করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ