১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪২

টাকার লোভ দেখিয়ে জিনিয়াকে ‘অপহরণ’ করেন লোপা!

  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে পথশিশু জিনিয়াকে ‘অপহরণ’ করে আলোচনায় আসেন লোপা তালুকদার। এরপরই তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আসতে শুরু করে। তার ছদ্মবেশেরও যেন শেষ নেই। গ্রেপ্তার হওয়া নূর নাজমা আক্তার ওরফে লুপা তালুকদার (৪২) পরিচয় দিতেন, কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিক তিনি।

এছাড়া তার ফেসবুক প্রোফাইল অনুযায়ী, তিনি ক্ষমতাসীন দলের একটি অঙ্গ সংগঠনের নেতা, কবি এবং এনজিওর কর্মকর্তা। শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে। জিনিয়াকে ‘অপহরণ’ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিনিয়াকে টাকার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করেছিলেন তিনি। এছাড়া পাচারকারী চক্রের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর জিনিয়াকে অপহরণ করা হয়। পরে গত রোববার নারায়ণগঞ্জ থেকে জিনিয়াকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফতুল্লার আমতলা এলাকার একটি বাসা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের এডিসি মিশু বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, লোপার অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাকে ট্রিপল মার্ডার কেসে একবার অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে।’

লুপার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানা গেছে, তিনি অগ্নি টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়া আওয়ামী পেশাজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদকও। তিনি পরিচয় দিতেন, বিভিন্ন সংবাদপত্র, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেলের ক্রাইম রিপোর্টার। এছাড়াও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা ইউনিয়নের সদস্য বলেও পরিচয় দিতেন লোপা।

পুলিশ জানিয়েছে, লোপা তার পেশা সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন তার প্রমাণ দিতে পারেননি। মিশু বিশ্বাস বলেন, ‘তিনি নিজেকে প্রেসক্লাবের সদস্য দাবি করেছেন, কিন্তু প্রমাণ দিতে পারেননি। শুধুমাত্র মোহনা টিভির বিজনেস কার্ড দিয়েছেন। তার দাবি, মোহনা টিভিতে কাজ করেছেন। এছাড়া আর কিছুই দেখাতে পারেননি।’

অপহরণ সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তাদের লুপা বলেছেন, জিনিয়ার প্রতি তার সহানুভূতি তৈরি হয়। এজন্য তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে পুলিশের ধারণা, তার উদ্দেশ্য ভিন্ন কিছু হতে পারে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, তার শিশু পাচারকারীদের সঙ্গে যোগসূত্র আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন কর্মকর্তারা।