১০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৪৪

বস্তাবন্দি শিশুর লাশ নদীতে ফেলেছিল লুপা

  © ফাইল ফটো

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত মুখ জিনিয়া নিখোঁজের ঘটনায় আলোচনায় আসেন জিনিয়াকে অপহরণ মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার নাজমা আক্তার লুপা তালুকদার ওরফে লুপা বেগম।

লুপাকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন ডিবি কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে লুপার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তার গ্রামবাসী। লুপা ও তার পরিবারকে নারী ও শিশু হত্যাকারী হিসেবেই চেনে স্থানীয়রা। কেননা এর আগেও একটি হত্যা মামলার আসামী সে ও তার স্বামী। তবে অভিযোগ রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সেই মামলা থেকে রেহাই পান লুপা ও তার পরিবার।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে পটুয়াখালীর গলাচিপা থানায় লুপা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওই হত্যা মামলা হয়। মামলা নং-১ তারিখ (১/৬/০৩), ধারা ৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪ দণ্ডবিধি।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাহিনুর নামে এক নারী গৃহকর্মীকে লুপার স্বামী (সাবেক) ধর্ষণ করে। এতে শাহিনুর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। এর পর লুপা, তার স্বামী মিলে শাহিনুর ও তার শিশুকন্যাকে অপহরণ করে ট্রলারে তুলে শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেন।

এ ঘটনার তদন্তে লুপা, তার বাবা প্রয়াত হাবিবুর রহমান ওরফে নান্না মিয়া তালুকদার, তার দুই ভাই প্রয়াত মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে লিটন তালুকদার, মোস্তাইনুর রহমান ওরফে লিকন তালুকদার, লুপার স্বামী রফিকুল ইসলাম বাদল ওরফে শহীদ বাদল, সুজন, হাকিম আলী, সেরাজ মিয়া, আলী হোসেন, ইছাহাক আলী ওরফে ইছছেক আলীসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

পরে ২০১৩ সালে ওই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি লুপা ও তার স্বজনরা ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ রেহাই পান। তৎকালীন স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার তদবিরে হত্যা মামলা থেকে মুক্ত হন লুপা।

প্রসঙ্গত, গত ১ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে সর্বশেষ জিনিয়াকে টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফটকে অপরিচিত দুজন নারীর সঙ্গে ফুচকা খেতে দেখেছিলেন তার মা সেনুরা বেগম। এর পর থেকে জিনিয়ার হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।

অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পর দিন (২ সেপ্টেম্বর) সেনুরা বেগম শাহবাগ থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। অবশেষে ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মিষ্টি মেয়ে জিনিয়াকে লুপা তালুকদারের কথিত বোনের বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।