চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন তল্লা মসজিদের ইমাম
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫১ AM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫১ AM
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লার সর্দার পাড়া বড় মসজিদ বায়তুস সালাহের মুয়াজ্জিন কাম ইমাম হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া (৪৭)। গত শুক্রবার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তারকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ‘এখানে ভালো লাগছে না। ২/১দিনের মধ্যে অসুস্থ ছেলে জোনায়েদ হোসেনকে (১৭) নিয়ে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসবো।’
দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর পুত্র বাড়ি ফিরলেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে। নিহত হাফেজ দেলোয়ার হোসেন নাঙ্গলকোটের বদরপুর মধ্যপাড়ার মৃত হাফেজ মাওলানা শফিকুর রহমানের ছেলে। তাদের পিতা-পুত্রের মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
জানা গেছে, হাফেজ দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে জোনায়েদ হোসেন (১৭) নিউ খানপুর হাসপাতাল রোড কাওমি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্র। আর অপর ছেলে হাফেজ জাকারিয়া (১৩) সেখানকার জামেয়া হাজী সাইদুদ্দিন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছিল।
দেলোয়ার হোসেন দুই ছেলেকে নিয়ে ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন। তিনি কালির বাজার আমলাপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে লেখাপড়া শেষ করে বাইতুস সালাহ মসজিদে ২৫ বছর বয়স থেকে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, দেলোয়ার হোসেনের পিতা শফিকুর রহমান ভূঁইয়াও ওই এলাকার তল্লা বড় মসজিদে দীর্ঘ ৪০ বছর মুয়াজ্জিন ছিলেন। ৭/৮ বছর পূর্বে মারা যান তিনি। বাবার কর্মস্থল সূত্রে দেলোয়ার হোসেনও বায়তুস সালাহে ইমাম কাম মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার তিন মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৮), সুরাইয়া আক্তার (৮) ও ফাইজা আক্তারকে (৩) নিয়ে গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন।
দেলোয়ার হোসেনের শ্যালক জোবায়ের হোসেন জানান, নিহত দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে জোনায়েদ হোসেনের লাশ শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। পরে তল্লা জামে মসজিদ এলাকায় প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শনিবার সন্ধ্যায় নাঙ্গলকোটের ঢালুয়ার বদরপুরে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাদেরকে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল হাছান ভূঁইয়া বাছির বলেন, হাফেজ দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাবো। অসহায় পরিবারটিকে সহায়তা করার জন্য তিনি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও সহযোগিতা কামনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লামইয়া সাইফুল বলেন, দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা। আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।