সপরিবারে বর্বর সন্ত্রাসী হামলার শিকার ববি শিক্ষার্থী

  © টিডিসি ফটো

বর্বর সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আমির হামজা ও তাঁর পরিবার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। হামলায় আহত তাঁর মা ও বোনের অবস্থা আংশঙ্কাজনক। গুরুতর আহতাবস্থায় তাঁর মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে যশোর নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন আমির হামজা। তাঁর বাড়ি যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার কুলিয়া গ্রামে। সেখানেই এ হামলার শিকার হন তিনি ও তার পরিবার।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হামলার শিকার আমির হামজা বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশে একটি অব্যবহৃত ঘরে গ্রামের বেশকিছু প্রভাবশালী মাদকাসক্ত কিশোর-যুবক ইয়াবা, গাঁজা সেবন করতো। আমরা এর বিরোধীতা করলে আমাদেরকে মারার হুমকি দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দেই। তিনি সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেন।’

তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউএনও বদলি হয়ে গেলে তারা আমাদের টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইচ্ছা করে আমার মায়ের গায়ে ফুটবল মারে। অথচ স্বাভাবিকভাবে মায়ের বসার জায়গায় বল যাওয়ার কথা না। মা বল নিয়ে মাফ না চাইলে তা দেবেন না বলার সাথে ১৫-২০ জন লাঠি ও অনান্য অস্ত্র নিয়ে মায়ের ওপর এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

তিনি আরো বলেন, ‘হামলায় মায়ের মাথা ফেটে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। তাকে বাঁচাতে গেলে আমার বোনকেও (সরকারি এম এম কলেজের ছাত্রী) তারা বুট দিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি মেরে হাড়-পাঁজর ভেঙে দেয়। ভাই এগিয়ে গেলে তাঁরও মাথা ফাটিয়ে দেয় তারা। এছাড়া আমাকে বেধে পায়ে লাঠি দিয়ে মারে তারা। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে আমাদের ওপর হামলা চালায় তারা। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।

স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দিতে গেলে তারা পাগলের ছেলেমেয়ে বলে হাসি-তামাশা করে- এমন অভিযোগ করে আমির হামজা বলেন, ৩০ মিনিট পর মাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু মায়ের অবস্থা খারাপ হওয়ার তাকে ঢাকায় রেফার করেছে। নিজের উপবৃত্তির তিন হাজার টাকা ছিল, তাও খরচ হয়ে গেল। বাবা মানসিক রোগী।

তিনি বলেন, পরিবারের আর আয়ের কেউ নেই। মাকে বাঁচাতে এখন অনেক টাকা লাগবে। একদিনে ফার্মেসীতে সাত হাজার টাকা বিল এসেছে। কিন্তু আমার কাছে কোনো টাকা-পয়সা নেই।

এ বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরাফাত রহমান তাঁর নিকট অভিযোগ আসেনি বলে জানান। তিনি বলেন, যারা এ কাজ করেছে তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সে অনুযায়ী পুলিশি সহযোগিতা এবং নির্যাতিতদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করা হবে জানিয়েছেন তিনি।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করেছি। সিনিয়র এএসপির সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে পরবর্তীতে মেসেজও করেছেন বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দেওয়া হবে। তার যদি মনে হয়, কোথাও আইনী সহায়তা পাচ্ছেন না তাহলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ এছাড়াও বিষয়টি অবহিত হওয়ার সাথে সাথে কিছু আর্থিক সহায়তা করেছেন বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ