সিনহা হত্যা ফোকাস না করে শিপ্রা কেন চ্যানেল প্রচারে ব্যস্ত?
- মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন
- প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২০, ১২:২১ PM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২০, ১২:৫৬ PM
মেজর রাশেদ খান (অবঃ) এর হত্যার ঘটনাকে ফোকাস না করে হঠাৎ শিপ্রা কেন নিজেদের চ্যানেলের প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে গেলো? ডয়চে ভেলের সাক্ষাৎকারে শিপ্রাকে প্রশ্ন করা হয়, সেদিন রাতে কি হয়েছিলো? শিপ্রা উত্তরে বলে, সরি আমি এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছি না।
ডয়চে ভেলের উপস্থাপক আবারও প্রশ্ন করে, আপনাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, আসলেই কি আপনার কাছে কোন মাদক ছিলো? শিপ্রা উত্তরে বলে, সরি আমি এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছি না। তার নিকট তৃতীয় প্রশ্ন করা হয়— যেদিন তাকে হত্যা করা হয়, সেদিন কি তিনি সেনাবাহিনীর combat t shift, pant, shoes পরে ছিলেন? শিপ্রা বরাবরের মতে বলে, আপনি যদি কেইস রিলেটেড কোন প্রশ্ন না করেন, তাহলে আমি খুশি হবো।
ডয়চে ভেলে আবার প্রশ্ন করে, এই যে জাস্ট গো ও ভ্রমণ বিষয়ক আইডিয়াটা কার ছিলো? আচ্ছা মেজর রাশেদ খান (অবঃ) নাকি আপনাদের? শিপ্রা উত্তরে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলবো বলে চিন্তা করছিলাম, এবং প্ল্যানটা সিনহার সাথে যখন শেয়ার করি তখন সে আগ্রহ দেখায় ও বলে, Let's do it together.
এর আগে মিডিয়া সাক্ষাৎকারে আমরা দেখেছি শিপ্রা বলেছে, আমরা সব সত্য বলবো। আমরা এখন ট্রমাটাইজড। এমনকি সিফাতের কথা বারবার সে বলে দিয়েছে। সিফাত যখন মুখ খুলতে গেছে, তখন মিডিয়ার সামনেই সিফাতের হাত চেপে ধরেছে এবং সিফাতকে শিপ্রা কোন কথা বলতে দেয়নি।
শিপ্রা ট্রমাটাইজড হলে সে মিডিয়ার সামনে কেন? নিজের ইউটিউব চ্যানেলের প্রচারণা করতে? হ্যাঁ। শিপ্রা সেটিই বলেছে, তাদের স্বপ্ন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের জাস্ট গো নামে একাধিক চ্যানেল খোলা হয়েছে, তাই তারা তাদের চ্যানেলে ভিডিও আপলোড শুরু করেছে। এবং এবিষয়ে কথা বলা শুরু করেছে।
প্রথমদিনের সাক্ষাৎকার থেকেই এই মেয়েটির কথাবার্তা অতিউৎসাহীমূলক। সিফাত কথা বলতে চাইলেও, সে তার মুখ বন্ধ করে দেয়। ভাই আপনাদের এই ইউটিউব চ্যানেলের প্রচারণা দেখার জন্য জাতি গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে? আপনার মত হাজারটা শিপ্রা এমন ইউটিউব চ্যানেল চালাচ্ছে। কিন্তু দর্শকপ্রিয়তা পাচ্ছে না।
আর আপনি এখন মেজর রাশেদ খান (অবঃ) বিষয়টাকে হালকা করতে আইছেন নিজের ইউটিউব চ্যানেলের প্রচারণা করতে? আপনার রুমে মাদক ছিলো কি না, সে বিষয়ে একটা উত্তর দিতে আপনি ট্রমাটাইজডের কারণ দেখান। বাহ!
আপনাদের মুক্তির জন্য বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করেছে। আমরা রাজপথে নেমেছি। বাংলাদেশের কয়টা ছাত্র সংগঠন আর কয়টা রাজনৈতিক দল মাঠে নেমে প্রতিবাদ করেছে, এখন খোঁজ নিয়ে দেখেন। মেজরকে হত্যার পরে যখন কোন সংবাদপত্র টিভি চ্যানেল নিউজ করছিলো, কয়েকটা মিডিয়া ঘটনার ১ দিন পরে নিউজ করে আবার ডিলিটও করে দেয়, ভয়ে মানুষ কথা বলছিলো না, তখন এই দেশের তরুণসমাজ জেগে ওঠে।
আপনাদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে আন্দোলন হয়েছে। আমরা বরাবরই বলেছি, আপনারা রাজসাক্ষী। আপনারা বাইরে আসলে জাতি সব সত্য জানতে পারবে, কিন্তু?
আপনার বক্তব্যের মাঝে মেজরের প্রতি ন্যূনতম সম্মান বা তার মেধাকে মূল্যায়ন করা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যেখানে সিফাতের বিভিন্ন বক্তব্যে সিনহা স্যার শোনা গেছে। আপনি বলছেন, সিনহা, ও, ওর ইত্যাদি। মেজর রাশেদ খান (অবঃ) নাকি আপনাদের সবার বন্ধু ছিলো। তবে সিফাত কেন এর ওর, সিনহা বলে না? আর বন্ধু থাকলেও তখন ছিলো, এখন জিনিসটা কিভাবে প্রেজেন্ট করতে হবে সেই বিষয়ে আপনার কোন ধারণা নেই।
আর সবচেয়ে বড় কথা, আপনি বলছেন মেজর রাশেদ খান (অবঃ) মারা গেছে। তিনি মারা গেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে? আপনি হত্যা আর মারা যাওয়ার পার্থক্য বোঝেন?
ভাই, বাংলাদেশের মানুষ মাথায় তুলতে পারে, আবার মাথা থেকে ধপাস করে ফেলতেও পারে। আমরা মেজর রাশেদ খান (অবঃ) এর বিচার চাই। নিজের প্রচারণা ও নিজের ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে কথা বলে মেজর রাশেদ খান (অবঃ) এর হত্যার বিষয়টা হালকা করতে আসবেন না। পরে এটা নিয়ে কাজ করার যথেষ্ট সময় পাবেন। আর এই মুহুর্তে আপনার মুখের হাসি বড্ড বিরক্ত লাগছে। নিজের সহকর্মী হত্যার কোন ছাপ আপনার ভিতরে লক্ষ্য করতে পারছিনা। অথচ আপনাদের সবচেয়ে সোচ্চার হওয়ার কথা ছিলো।
আপনি যেহেতু মেজর রাশেদ খান (অবঃ) এর হত্যা ও মামলা রিলেটেড কোন কথা বলতে চাচ্ছেন না, তাহলে চুপ থাকেন। অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে এনে মেজর হত্যার বিষয়টিকে হালকা করতে আসবেন না। আমি বুঝতেছি না, এটা আপনার অতিউৎসাহী মনোভাব নাকি নিজকে বড় সেলিব্রিটি ভাবতে শুরু করেছেন, নাকি কোন কারও চাপে পড়ে এসব অপ্রাসঙ্গিক বিষয় সামনে আনছেন?
এর আগে একটি স্ট্যাটাসে রাশেদ বলেন, শিপ্রার ভিডিও দেখার পরে অবাক হয়ে গেছি। দেশের প্রতিটা মানুষ যখন মেজর রাশেদ (অবঃ) এর হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার, তখন শিপ্রার এই ধরনের বক্তব্য দুঃখজনক। অন্তত আমি মেনে নিতে পারছি না। বরং তাদের একমাত্র দায়িত্ব এখন মেজর রাশেদ খান (অবঃ) এর বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়া।