ব্লগার আসাদ নুরের বাবা-মাকে হয়রানির প্রতিবাদ অ্যামনেস্টির
বাংলাদেশি ব্লগার আসাদ নুরের বাবা-মাকে হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া গবেষক সুলতান মোহাম্মেদ জাকারিয়ার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ব্লগার আসাদ নুরের বাবা-মাকে হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে, যারা তাদের ছেলের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।’
ব্লগার আসাদ নুর বলেছেন, কয়েকটি ভিডিও পাবলিশ করার জের ধরে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা করেছেন স্থানীয় ছাত্রলীগের একজন নেতা। সে মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে বরগুনার আমতলীতে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। খবর: বিবিসি বাংলা।
তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই ভোরে আমার বাড়িতে গিয়ে পুলিশ সব তছনছ করেছে। বাবা-মাসহ ছয়জনকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুদিন আটকে রেখে পরে ছেড়েছে। আমার বাবাকে দিয়ে আমাকে কল করিয়ে বলা হয়েছে যে আমি যেন ফেসবুকে দেয়া ভিডিওগুলো ডিলিট করি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহ আলম বলেছেন, তার পরিবারের কোনো সদস্যকে তারা আটক করেননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাঙ্গুনিয়া থানা থেকে জানানো হয়েছে, আসাদ নুরের বাড়িঘর তল্লাশিপূর্বক তাকে আটকের জন্য। আমরা সেজন্যই ওয়ারেন্ট নিয়ে তল্লাশি চালিয়েছি। কিন্তু আমরা কাউকে আটক করিনি সেখান থেকে।’
অন্যদিকে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় তখন দায়িত্বে ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুব মিলকী। তিনি বলেন, আসাদ নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করেছিলেন শিমুল গুপ্ত নামে এক ছাত্রলীগ নেতা, যেখানে ধর্মীয় ও ব্যক্তি অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আসলে উনি রাঙ্গুনিয়ায় বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে কিছু ভিডিও আপলোড করেছেন যা অনেককে আহত করেছে। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন।’
তবে আসাদ নুর দাবি করেছেন, রাঙ্গুনিয়ায় একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুর নামে ইসলাম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদের একটি মন্দির ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনা নিয়ে তিনি তিনটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় আমি সবসময়ই কাজ করি। রাঙ্গুনিয়াতেও খোঁজ নিয়ে দেখলাম যে, প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় রামুর মতো একটি ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সে কারণে আমি ভিডিওগুলো আপলোড করেছিলাম যাতে পরিষ্কার ছিলো যে কারা ইন্ধন দিচ্ছে বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে। আর এটিই প্রভাবশালীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। পরে তারা আমার বিরুদ্ধে সেখানে কিছু মৌলবাদী সংগঠনকে সামনে এনে মিছিল সমাবেশ করায় এবং এক পর্যায়ে ওই মামলা দায়ের করায়।’
তবে পুলিশ কর্মকর্তা মাহবুব মিলকী বলেছেন, মন্দিরটি করা হয়েছিলো সরকারের বন বিভাগের জায়গায় এবং এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অনেকদিন ধরে সমস্যা চলছিলো।