এসএসসি পাস করেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, করতেন অপারেশনও!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৮:০৫ AM , আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৮:০৫ AM
এসএসসি পাস করে কয়েক বছর বাড়ির বাইরে ছিলেন প্রমোদ চক্রবর্তী। পরে ফিরে এসে নামের সামনে যোগ করেন ডাক্তার তকমা। এছাড়া ভিজিটিং কার্ড ও ব্যবস্থাপত্রে পরিচয়ে লেখা এমবিবিএস, পিজিটি (সার্জারি), মা ও শিশু রোগে অভিজ্ঞ। বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পরিচয়ও আছে।
এভাবে ভালোই চলছিল তার রোগী দেখা। তবে এবার বেরিয়ে এসেছে তার আসল পরিচয়। মেডিকেল পাস না করা ডিগ্রিবিহীন এই ভুয়া ডাক্তারকে অর্থদণ্ড দিয়েছে মানিকগঞ্জ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তবে তাকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি, সে প্রশ্ন অনেকের।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সুপার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিংগাইর ও সাহরাইলের ফার্মেসি, সাভার ও রাজধানীর ওয়ারীতে চেম্বার বসিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন প্রমোদ। নিয়মিত রোগী দেখতেন স্থানভেদে ভিজিট নিতেন ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা করে। হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগী দেখার পাশাপাশি তিনি করতেন অপারেশনও।
প্রমোদ চক্রবর্তী যে প্রতারক তা প্রথম টের পান, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা নেওয়া মানিকগঞ্জ শহরের রানা হোসেন নামে এক ব্যক্তি। এরপর সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের নির্দেশনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে তদন্ত ও শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) অভিযুক্ত ভুয়া চিকিৎসককে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন এর ৪৪ ধারায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিদফতর, মানিকগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল এ জরিমানা করেন।
তবে প্রতারক প্রমোদ চক্রবর্তীর নিকট থেকে এ বিষয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের খাগড়াকুড়ি গ্রামে বলে জানা গেছে।
আসাদুজ্জামান রুমেল জানান, প্রমোদ চক্রবর্তী পদবির স্বপক্ষে বৈধ কাগজপত্র দেখতে পারেননি। তিনি স্বীকার করেছেন, কলকাতা থেকে কোর্স করেন কিন্তু বিএমডিসির কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই তার। ডিগ্রি ও পদবি সবই ভুয়া তার। এসব ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলেন। ভবিষ্যতে তিনি প্রতারণা করবেন না মর্মে মুচলেকা দিলে তাকে জেলে না পঠিয়ে অর্থদণ্ড করে ভোক্তা অধিদফতর।
জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস জানান, প্রমোদ চক্রবর্তী সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর তাকে অর্থদণ্ড দিয়েছে। সেই সঙ্গে জরিমানার ২৫ শতাংশ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা অভিযোগকারীকে প্রদান করা হয়েছে।