নুরের উসকানিতে ভিয়েতনামে বাংলাদেশ মিশন দখলের চেষ্টা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভিয়েতনামে অবৈধভাবে যাওয়া ২৭ জন বাংলাদেশি দেশটিতে বাংলাদেশ মিশন দখল করার চেষ্টা করেছে। একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাদের কর্মকাণ্ডে উসকানি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। আজ সোমবার (৬ জুলাই) সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
তাদের মধ্যে ১১ বাংলাদেশিকে নিয়ে গত ২ জুলাই একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকায় আসে বলেও জানান মন্ত্রী। তবে নুরুল হক নুর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তখন ২৭ জন বাংলাদেশি মিশনটি দখল করে। তারা বলে, তাদেরকেও পাঠাতে হবে বাংলাদেশে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বলা হলো, ফ্লাইট যাচ্ছে, ফেরত যাও। কিন্তু তারা বললো, ওই ফ্লাইটে ফেরত যাবে না। তারা টাকা খরচ করবে না। এখন তারা হোটেলে আছে।’ তারা সবাই অবৈধভাবে ভিয়েতনামে যায় এবং কোনও পাসপোর্ট নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা পাসপোর্টের কথা বলতেও রাজি হয়নি। বলে, এগুলো এজেন্টরা নিয়ে গেছে। জাতীয় পরিচয়পত্রও দেখাতে চায় না, কোনও সহযোগিতা করছে না তারা।’
মোমেন বলেন, ‘তাদের দাবি হচ্ছে, তাদের বিশেষ ফ্লাইটে নিয়ে যেতে হবে। তারা ভিডিও মারফত আন্দোলন শুরু করেছে। বলছে, পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মিশনে আক্রমণ করবে। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রবাসী অধিকার পরিষদ। এর প্রধান বোধহয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নুর সাহেব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে যায় তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত। এটি আমরা করবো না, আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে। এর ফলে আমাদের বদনাম হয়। বিদেশে গেলে যখন অসুবিধায় পড়লে আমাদের কাছে আসে।’
এ বিষয়ে নুরুল হক নূর বলেন, “আমি খুব অবাক হচ্ছি যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো উচ্চশিক্ষিত লোক যে ধরনের কথাবার্তা বলেন, তাতে এদেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়, প্রবাসীরা অপমানিত হন। করোনাভাইরাসের শুরুতে ‘প্রবাসীরা দেশে আসলে নবাবজাদা হয়’ এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। কিছুদিন আগে বলেছেন –প্রবাসীরা দেশে আসলে চুরি ডাকাতি বেড়ে যায়’। এসব অসংলগ্ন, আপত্তিজনক কথাবার্তা প্রায়েই আসে। সেটার নিয়মিত চর্চা হিসেবেই বোধহয় তিনি একথা বলেছেন।’
নুর বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের একজন ছাত্র নেতা, জাতীয় নেতা নই, রাজনৈতিক দলের প্রধান নই। আমি ভিয়েতনামে দূতাবাস দখল করাবো, এটা হাস্যকর! এই কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে আসা বাতুলতা ছাড়া কিছু না। আমি ‘প্রবাসী অধিকার পরিষদ’ সংগঠনে যুক্ত আছি, যেটা মাস খানেক তৈরি হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এতো শক্তি হয়ে গেল যে, আমরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করবো! এটা ফালতু কথা।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে প্রায় ২৫ জন বাংলাদেশি পাচারকারী চক্রের হাতে পড়েছিল। তারা টাকা খরচ করে গেলেও কাজকর্ম দেওয়া হয়নি। আটক রাখা হয়েছিল। তারা সেখান থেকে পালিয়ে দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছে। দূতাবাসের কিছু লোক নাকি অসাধু সিন্ডিকেটের সঙ্গে তাদের আটক রেখেছে। তখন আমরা এটার প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই কথা বলা যদি উসকানি হয় তাহলে শত সহস্রবার দেবো। এটা অন্যায় হলে হাজার বার করবো।’