দশম শ্রেণীর ছাত্রী শিমুর শিকলবন্দী জীবন!

  © সংগৃহীত

দশম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া ইসলাম শিমু (১৭)। পরিবারের অজান্তে প্রেমিকের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে। সে অপরাধে প্রায় এক মাস যাবৎ তাকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

শিমু স্থানীয় নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ওই গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের বড় মেয়ে সে। জানা যায়, নওপাড়ার মোঃ বকুল মন্ডলের ছেলে মো. মাসুদ রানার (২১) সঙ্গে সাদিয়া ইসলাম শিমুর (১৭) পঞ্চম শ্রেণি থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল।

গত ৩ মার্চ তারা দুজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে ৬ মার্চ ঢাকা হাইকোর্টে তারা বিয়ে করে। তিন মাস ঢাকায় বসবাসও করেন তারা। এদিকে মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলাম ওই ছেলে ও তার বাবাসহ ১৪ জনের নামে গুরুদাসপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

তিন মাস পর ঢাকা থেকে মাসুদ রানা এবং তার বাবা বকুল মন্ডলকে আটক করে পুলিশ। এর ১৪ দিন পর জামিনে মুক্ত পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তারা।

সরেজমিনে ওই মেয়ের বাড়ি গেলে সাংবাদিক দেখে গেট বন্ধ করে দেয় তার পরিবারের লোকজন। পরে মেয়ের বাবাকে বুঝিয়ে কথা বলার সুযোগ হয় মেয়েটির সাথে। সংবাদকর্মী দেখেই মেয়ের পা থেকে শিকল খুলে রুম থেকে বের করা হয়। তার বাম পা ও হাতে লোহার শিকলের দাগও দেখা যায়।

সাদিয়া ইসলাম শিমু বলেন, তাকে প্রায় এক মাস শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে, শারীরিক নির্যাতন করা হয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। মুক্ত হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান তিনি।

শিমুর প্রেমিক মাসুদ রানা বলেন, তারা দু’জন সাত বছর ধরে প্রেম করেন। পরিবার মেনে না নেওয়ায় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। তবে জন্মনিবন্ধনে বয়স ১৮ বছর থাকলেও সার্টিফিকেটে ১৭ রয়েছে। বাড়িতে এসে তার শিকলবন্দী জীবনের খবর পেয়ে ভেঙ্গে পড়েছেন বলেও জানান তিনি। এসময় শিমুকে শিকলবন্দী জীবন ও নির্যাতন থেকে মুক্ত করে দেওয়ার আহবান জানান তিনি।

শিমুর বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, মেয়ের এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। তাকে ভুল বুঝিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। মানসিক চাপে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ঘরের মধ্যে রাখা হয়েছে। এসময় শিমুকে শিকলবন্দী করে রাখা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ