ঢাবি ছাত্রী সুমাইয়া হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বশুর রিমান্ডে

  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন হত্যা মামলার প্রধান আসামি স্বামী মোস্তাক হোসাইন এবং শ্বশুর জাকির হোসেনকে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ শুক্রবার (২৬ জুন) নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, মোস্তাক এবং জাকিরকে আদালতে হাজির করার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত বুধবার নাটোর জেলা পুলিশ বগুড়া থেকে মোস্তাক এবং জাকিরকে রাজশাহীর বাঘা থেকে গ্রেপ্তার করেন।

মামলার অপর দুই আসামি সুমাইয়ার শাশুড়ী সৈয়দা মালেকা এবং ননদ জুই খাতুন জেল হাজতে রয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অপর একটি আদালতে রিমান্ডে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। আগামী রোববার আবেদনের শুনানি হবে।

পুশি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল সুমাইয়া প্রেম করে হরিশপুর গ্রামের মোস্তাককে বিয়ে করে। সুমাইয়ার বাবা সিদ্দিকুর রহমান মেয়ের দিকে তাকিয়ে বেকার জামাই মোস্তাকের চাহিদা পূরণ করে আসছিলেন। প্রায় ৮ মাস আগে সিদ্দিকুর রহমান মারা যাওয়ার পরও জামাইয়ের চাপ অব্যাহত ছিল।

বাড়ি ভাড়ার টাকায় সংসার চালিয়ে দুই ছেলের খরচ, জামাইয়ের চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছিলেন সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা। এ কারণে চাকরি করে সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিলেন সুমাইয়া। কিন্তু বেকার স্বামী মোস্তাক তা মেনে নিতে চায়নি। বারবার শারীরিক নির্যাতন চালাতো সুমাইয়ার ওপর।

গত সোমবার সকালেও সুমাইয়ার ওপর নির্যাতন চালালে সংজ্ঞাহীন সুমাইয়াকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে বলে সবাইকে জানায়। এ ঘটনায় প্রথমে কোনো পক্ষ মামলা করতে রাজি হয়নি। পরে নাটোর থানা পুলিশ একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে মায়ের কাছে হস্তান্তর করে। বিকালে শহরের গাড়িখানা গোরস্থানে সুমাইয়াকে দাফন করা হয়।

পরে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তার সন্দেহ হলে তিনি নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে। একপর্যায়ে সোমবার রাত ১টায় নিহত সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা বাদী হয়ে জামাই মোস্তাক ও ওই পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে মোস্তাকের মা সৈয়দা মালেক ও বোন জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে।


সর্বশেষ সংবাদ