‘প্রথমে ধাক্কা দেয়, এরপর মাথার উপর দিয়ে চলে যায় বাসটি’
রাজধানীর বাংলামোটরে বিহঙ্গ বাসের চাপায় দু’জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন। এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক বাসচালককে আটক করেছে। বাসটি জব্দ করে নেয়া হয়েছে শাহবাগ থানায়। পুলিশ বলছে, ফিটনেসবিহীন বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আঘাত করে দুই মোটরসাইকেল আরোহী ও এক পথচারীকে।
রাজধানীর মগবাজারের দিক থেকে এসে বাংলামোটর সিগনাল অতিক্রম করছিলো নীল রংয়ের মোটরসাইকেলটি। হয়তো কারওয়ান বাজার হয়ে কোনো গন্তব্যে যাওয়ার কথা ছিল আরোহীদের। কিন্তু, কে জানতো বাংলামোটর সিগনাল অতিক্রম করতে গিয়ে শাহবাগ থেকে দ্রুত গতিতে আসা বিহঙ্গ পরিবহনের বাসটি চাপা দেবে বাস। কেড়ে নিবে মোটরসাইকেল আরোহীর প্রাণ। মোটর সাইকেল আরোহীদের একজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। অপর একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় রাস্তা পার হওয়ার সময় একই বাসের চাপায় মারা যান আরেক পথচারী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বলেন, ‘প্রথমকে বাসটা ধাক্কা দেয়। ধাক্কা দেওয়ার সাথে সাথেই একজন পড়ে গেলে তার উপর দিয়েই বাসটা চলে যায়।’
আরেকজন বলেন, বলেন, মোটরসাইকেল পাশ দিয়ে একজন লোক দৌড়ঁ দিয়েছে। রাস্তা তখন খালি ছিল। মোটরসাইকেল তখন ব্রেক না করতে পেরে কাত হয়ে পড়ে গেছে। তখন মোটরসাইকেলের যাত্রীর মাথার উপর দিয়ে বাস চলে গেছে।’
ঘটনার পর ঘাতক বাসটি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ বাসটিকে কাওরান বাজার এলাকা থেকে আটক করে। সেই সঙ্গে আটক করা হয় বাস চালককেও।
কর্তব্যরত পুলিশের একজন বলেন, ‘গাড়ির ব্রেক ফেল হওয়ার কথা নয়। আর যদি হয় তাহলে বাসের ত্রুটি ছিল। বাসের ড্রাইভারকে আটক করেছি তার নাম জাফর। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানানো যাবে।’
ঘটনায় নিহত একজন হলেন মো. বেলায়েত হোসেন (৫২)। গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী থানার চড়লক্ষীপুর গ্রামে। পেশায় ছিলেন ক্ষুদ্র ঘানি তেলের ব্যবসায়ী। ফুটপাতে তেল বিক্রি করতেন তিনি। অন্যজন মো. মাকসুদুর রহমান। বয়স আনুমানিক ৪২ বছর। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার নতুন হাবলি গ্রামে। স্ত্রী ও তিন মেয়ে, এক ছেলেকে নিয়ে ঢাকাতেই বসবাস করতেন তিনি। মগবাজারে একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিতে চাকরি করতেন মাকসুদুর।
রাজধানীর বাংলামোটর সিগন্যালে গত বছরের আগস্টে ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাসের চাপায় পা হারান বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রাণী চৌধুরী।