বরগুনায় রিফাত স্টাইলে পিটিয়ে হত্যা করা হলো কিশোরকে

  © সংগৃহীত

বরগুনায় তুচ্ছ ঘটনায় কলেজছাত্র রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার স্টাইলে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে হৃদয় নামে এক কিশোরকে। ঈদের দিন বিকেলে সেখানকার পায়রা নদীর পাড়ের গোলবুনিয়া বল্ক ইয়ার্ডে ঘুরতে গেলে তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, কয়েকজন বন্ধু নিয়ে ওই ইয়ার্ডে ঘুরতে যায়। এসময় তার এক বান্ধবীর সাথে দেখা হলে কথা বলে হৃদয়। তখন সে এবং তার বান্ধবীকে নিয়ে সেখানকার স্থানীয় নয়ন এবং তার সহযোগীরা খারাপ মন্তব্য করেন। হৃদয় এর প্রতিবাদ করলে নয়নের সঙ্গে হেলাল, আবীর, তনিক ও নোমানসহ কয়েকজন হৃদয়ের উপর হামলা চালায়।

এসময় হৃদয় দৌঁড়ে চলে যেতে চাইলেও তাড়া করে তাকে পেটাতে থাকে তারা। একপর্যায়ে আঘাত পেয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে হৃদয়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় বরগুনা সরদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার সকালে হৃদয়ের মৃত্যু হয়। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হৃদয় চলতি বছর টেক্সটাইল ভোকেশনাল স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে। বাবা দেলোয়ার হোসেন রিকশাচালক। থাকেন বরগুনার চরকলোনি এলাকার চাঁদশী সড়কে ভাড়া বাসায়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিক কাজি এবং তার ভাই কনু কাজির ছেলে নোমান, সেখানকার আলতাফ মৃধার ছেলে হেলাল, লিটন হাওলাদারের ছেলে নয়ন, আবীর ও তনিকসহ তাদের সহযোগীরা গোলবুনিয়া ব্লক ইয়ার্ডে অনেক অপরিচিত ছেলেমেয়েকে অপমান করতো। হৃদয় হত্যার ঘটনাও তারই ধারাবাহিকতায় হয়েছে বলে তিনি জানান।

হৃদয়ের বন্ধু মিঠুন রায় জানান, তারা সাতজন বন্ধু ব্লক ইয়ার্ডে ঘুরতে যান। এসময় হৃদয়ের সাথে এক বান্ধবীর দেখা হলে তার সাথে কথা বলতে থাকে। সেসময় নয়ন, হেলাল ও নোমানসহ  কয়েকজন বাজে মন্তব্য করে। এর প্রতিবাদ করলে ১০-১৫ জনের একটি দল হৃদয়ের উপর হামলা চালায়।হৃদয়ের বন্ধুরা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকেও মারধর করে।

হৃদয়ের অপর বন্ধু ফেরদৌস মোল্লা বলেন, হামলাকারীদের চিনি না। তবে অনেক বয়স্ক লোকজনকে হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা গেছে। হৃদয় অজ্ঞান হয়ে গেলে একটি অটো রিকশায় তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম জানান, হৃদয় তাদের একমাত্র ছেলে। তাঁর বাবার বাড়ি ওই এলাকায় হওয়ায় হৃদয়ের হত্যাকারীদের মধ্যে হেলাল মৃধাদের সাথে তাদের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জানা গেছে, হৃদয়ের বাবা-মা বরগুনায় ফিরে না আসায় কোনও মামলা হয়নি। তবে বরগুনা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) আবীর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ