১২ মে ২০২০, ২১:০০

সাঈদীর মুক্তি নিয়ে বৈঠক, সেই রকি বড়ুুয়া গ্রেফতার

  © সংগৃহীত

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্ত করতে ‘অস্থিতিশীল পরিস্থিতি’ তৈরির চেষ্টা করার অভিযোগে রকি বড়ুয়া নামে একজনকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র‌্যাব। একইসঙ্গে তার ছয় সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।

র‌্যাব জানিয়েছে, সাঈদীর মুক্তির জন্য রকি বড়ুয়া তার সন্তান মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে বৈঠক করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (১২ মে) চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব চট্টগ্রাম জোনের প্রধান লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল গণমাধ্যমকে জানান, রকি বড়ুয়া মূলত প্রতারক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার তথ্য প্রচার করে প্রতারণা করেন তিনি। সম্প্রতি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ওই বৈঠকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করে সাঈদীকে মুক্তির পরিকল্পনা হয় বলে গোয়েন্দা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর আমরা রকি বড়ুয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা করতে থাকি।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাঁচলাইশে রকি বড়ুয়ার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সেখানে বিদেশি মদ ও পিস্তল পাওয়া গেছে। অভিযানের সময় রকি পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে লাফ দেন। এতে দুই পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন রকি।

গ্রেফতার হওয়া তার ছয় সহযোগীর মধ্যে এক নারী রয়েছেন। তারা মূলত রকি বড়ুয়ার ওই আস্তানায় থাকতেন। সেখানে স্ট্যাম্প-সিল, গেরুয়া পোশাক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের ছবি পাওয়া গেছে।

মাসুদ সাঈদী এবং ধর্মীয় বক্তা তারেক মনোয়ারের সঙ্গে রকি বড়ুয়ার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তাকে গ্রেফতারের দাবিতে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় তার বাড়িতে সম্প্রতি মানববন্ধনও হয়েছে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, গত ১ এপ্রিল মাসুদ সাঈদী ও তারেক মনোয়ারের সঙ্গে লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম বিবিরবিলা গ্রামে রকি বড়ুয়া বৈঠক করেন। বৈঠকে সাঈদীকে মুক্ত করাতে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা হয়।

বৈঠকের পর ২ মে ছাত্রশিবির সাঈদীর মুক্তির দাবিতে প্রচারণা চালায়। ৩ মে লোহাগাড়া এলাকায় রকির বাড়ির পাশে বৌদ্ধমন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে তাকে গ্রেফতারে খুঁজছিলেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

রকির বিরুদ্ধে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং অস্ত্র ও মাদক আইনে তিনটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৭ প্রধান লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল।