১৭ এপ্রিল ২০২০, ২২:১৯

এক টাকাও পায়নি রাজীবের দুই ভাই, এখন খোঁজও রাখে না কেউ

  © ফাইল ফটো

আপিল বিভাগের নির্দেশের পরও একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ পাননি দুই বাসের মধ্যে পড়ে প্রাণ হারানো রাজিব হাসানের দুই ভাই। দেশের সবোর্চ্চ আদালত  আপিল শুনানির পূর্বে এক মাসের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেন স্বজন পরিবহনকে। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও টাকা দেয়নি স্বজন পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল কারওয়ান বাজারে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের বাসের রেষারেষিতে হাত হারান রাজধানীর তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজিব হাসান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

টাকা না দেয়ার ব্যাপারে স্বজন পরিবহনের কৌসুলি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুই লাখ টাকা জোগাড় করেছি। কিন্তু করোনার কারণে টাকা দিতে পারছি না।

এদিকে বিআরটিসির আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান জানান, ‘রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন রয়েছে। আদালত খুললে মামলাটির শুনানি হতে পারে।’

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজিবের মেজ খালা খাদিজা বেগম লিপি। তিনি বলেন, ‘মানবিক কারণে স্বজন পরিবহন কর্তৃপক্ষের উচিত ছিলো নির্ধারিত সময়ে টাকা দেওয়া। কিন্তু তারা তা করেনি। এখন বলছে দুই লাখ টাকা জোগাড় করেছে। এটা আইওয়াশ ছাড়া কিছু না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজিবের মৃত্যুর পর অনেকেই সাহায্য করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখন আর কেউ খোঁজ রাখে না।’

এ ঘটনায় রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রাজিবের দুই ভাইকে ৫০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ে দুটি বাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে দূর্ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে দুই পরিবহন কোম্পানিকে ২৫ লাখ টাকা করে ৫০ লাখ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এর বিরুদ্ধে আপিল করে দুই পরিবহন সংস্থা। আপিল বিচারাধীন অবস্থায় গত ১৩ অক্টোবর স্বজন পরিবহনকে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু এক মাসের মধ্যে ওই টাকা দিতে নির্দেশ দেয়া হলেও কোন টাকা পাননি রাজিবের দুই ভাই।

স্বজন পরিবহনের আইনজীবী জানান, কোম্পানির মালিকদের বেশিরভাগই গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন ৬-৭ জন পরিচালক রয়েছেন। যাদের আর্থিক সঙ্গতি আছে তারা দুই লাখ টাকা জোগাড় করছেন। এখন সব বন্ধ না থাকলে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা অব্যাহত থাকত। এসময় আদালত টাকা দিতে আরো ছয় মাস সময় দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

নিহত রাজিবের দুই ভাই রাজধানীর একটি মাদ্রাসায় পড়েন। করোনার কারণে মাদ্রাসা বন্ধ। এজন্য তারা পটুয়াখালীর বাউফলে নানা বাড়িতে রয়েছেন।