ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল, ১০ মিনিট পর রাস্তায় সন্তান প্রসব
হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠানোর ১০ মিনিট পরই রাস্তায় সন্তান প্রসব করতে বাধ্য হলেন এক প্রসূতি মা। গাইবান্ধার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আসা ওই প্রসূতিকে ভর্তি না নিয়ে ফেরত পাঠায় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে মধ্যপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় সন্তান প্রসব করেন ওই মা।
ওই প্রসূতির নাম মিষ্টি আকতার (২০)। তিনি সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী। এ ঘটনায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, স্ত্রীর প্রসব ব্যথা উঠলে দ্রুত তাকে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আনেন স্বামী আব্দুর রশিদ। একটি অটোবাইকে করে মিষ্টি আকতারকে নিয়ে এলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মী তৌহিদা বেগম কোনরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এরপর হাসপাতালের মাত্র ২০০ গজ দূরে মধ্যপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় ওই মা ছেলে সন্তান প্রসব করেন। এ সময় উৎসুক জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ঘেরাও করেন। পরে বাধ্য হয়ে পরবর্তী চিকিৎসা দেয় শিশু কল্যাণ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সমাজসেবক ওয়াজিউর রহমান বলেন, মাতৃসদনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ ধরনের ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটিয়ে থাকেন। রোগী না দেখেই ক্লিনিকগুলোতে যাওয়ার পরামর্শ দেয় তারা। আজকের ঘটনা তারই প্রমাণ।
গাইবান্ধা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদ আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের যথাযথ চিকিৎসা প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, করোনা আতঙ্কে যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী রোগীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর থানা পুলিশের ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনক। নবজাতক ও তার মাকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. সেকেন্দার আলী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।